• আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে পড়ুয়ারা, স্কুলে পড়ল 'খুনের হুমকি' দেওয়া পোস্টার
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২১ আগস্ট ২০২৪
  • আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে গোটা রাজ্যের মানুষ গর্জে উঠেছেন। ৮ থেকে ৮০, সবাই পথে নেমেছেন এই নৃশংস ধর্ষণ ও খুনের বিচার চেয়ে। অবশ্য শুধু বাংলা নয়, গোটা দেশেই এই নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এই আবহে প্রতিবাদে সম্প্রতি মৌন মিছিল করেছিল কৃষ্ণগঞ্জের মাজদিয়া রেলবাজার ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। আর সেই মিছিলের পরই স্কুলের গেটে পড়ল হুমকি পোস্টার। সেই পোস্টারে লেখা, 'প্রতিবাদের আর এক নাম মৃত্যু'। এদিকে এই পোস্টার পড়তেই আতঙ্কিত এলাকাবাসী। তবে তারই সঙ্গে ক্ষুব্ধ তারা। কে বা কারা এই পোস্টার দিয়েছে, তা অবশ্য জানা যায়নি। যদিও এই পোস্টার পড়ার পরও বহু পড়ুয়া এবং তাদের অভিভাবকরা জোর গলায় বলেছেন, 'প্রতিবাদ জারি থাকবেই।'

    গত ৯ অগস্ট রাতে আরজি কর হাসপাতলে নৃশংস ভাবে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছিল এক চিকিৎসককে। সেই ঘটনায় গর্জে উঠেছে গোটা বাংলা। ১৪ তারিখের রাতে এই আবহে অনুষ্ঠিত হয়েছিল 'মেয়েদের রাত দখল' কর্মসূচি। এরপরও গত কয়েকদিন ধরে কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে আন্দোলন-প্রতিবাদ। এই সব আন্দোলন প্রতিবাদ নিয়ে আবার শাসক দলের নেতাদের বিস্ফোরক সব মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে।

    আরজি কর কাণ্ডে প্রতিবাদ নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী উদনয়ন গুহকে বলতে শোনা যায়, 'গ্রামের মহিলারা মদের ঠেক ভেঙে দেন, জুয়োর ঠেক ভেঙে দেওয়ার জন্য ঝাঁটা নিয়ে মিছিল করেন। কিন্তু মদের ঠেক ভাঙার জন্য বা জুয়ার ভাটি ভাঙার জন্য আমি কোনওদিন কোনও জিন্স পরা মহিলাকে দেখিনি, আমি কোনওদিনও বয়কাট চুলের মেয়েকে দেখিনি। কারণ ওটার মধ্যে ঠিক আবেগটা আসে না, ব্যাপারটা জমে না। এটা তো গ্রামের গরিব মা মেয়েদের আন্দোলন। যে আন্দোলন টিভিতে দেখায়, শহুরে মহিলারা সেই আন্দোলনেই যান। আগে ঘর সামলান। নিজের ঘর সামলান।'

    এদিকে বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, 'আমার কাছে খবর আছে। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারবাবুরা ধরনার নাম করে বেড়াতে যাচ্ছেন। আমার কাছে খবর আছে। ধরনার নাম করে বাড়ি চলে যাচ্ছেন। গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড নিয়ে বেড়াতে চলে যাচ্ছেন। ডাক্তারিটা না করে। দয়া করে এসব করবেন না। আপনারা ডাক্তারি করতে এসেছেন, রাজনীতি করতে নয়। আপনারা ডাক্তারিটা করুন। বিনা চিকিৎসায় রোগীরা যদি মারা যেতে শুরু করে আপনাদের বিরুদ্ধে জনরোষ তৈরি হবে। গ্রামের মানুষ চলে আসবে হাসপাতালে হাসপাতালে। তখন কিন্তু আমরা রক্ষা করতে পারব না।'

    উল্লেখ্য, গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। তারপর নাগরিক সমাজ রাতের দখল নিতে রাস্তায় নেমেছিল। সেই সময় সরাসরি এই কর্মসূচির বিরুদ্ধে মুখ না খুললেও তৃণমূল কংগ্রেস বুঝিয়ে দেয় যে তারা মনে করছে, এই আন্দোলন আদতে বিরোধীদের মদতে সরকারের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে। এদিকে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ডার্বি ম্যাচ বাতিল করা হয়েছিল। যা ঘিরে গোটা শহর উত্তাল হয়। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও ইএম বাইপাস ৪ ঘণ্টার জন্যে স্তব্ধ করে দেন প্রতিবাদীরা। এরপর ডাক্তারদের পাশাপাশি এই ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবীরাও। মমতা নিজেও নেমেছেন রাস্তায়। তৃণমূল নেতারাও 'বিচার চাইছেন'। তবে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ নিয়ে তাঁদের 'আপত্তি' যেন প্রতি ক্ষেত্রেই প্রতিফলিত হচ্ছে।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)