মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ধর্মঘট উঠল আলুর, আপাতত ভিন রাজ্যে যাবে ২ লক্ষ টন
এই সময় | ২১ আগস্ট ২০২৪
এই সময়: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে আপাতত সঙ্কট কাটল আলু ব্যবসায়। মঙ্গলবার নবান্নে আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রশাসনের বৈঠক হচ্ছে শুনে সেখানে আচমকাই যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। আলু ব্যবসায়ীদের দাবি ছিল, ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠানোর ছাড়পত্র দেওয়া হোক। রাজ্যের যুক্তি ছিল, আলু বাইরে পাঠানো হলে বাংলায় আলুর দাম সাধারণ মানুষের নাগাল ছাড়াতে পারে।এ দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এক সপ্তাহের জন্য আলু ভিন্ রাজ্যে পাঠানোর ছাড়পত্র দেন। তবে ঠিক হয়েছে, ২ লক্ষ টনের বেশি আলু বাইরে পাঠানো যাবে না। দক্ষিণবঙ্গ থেকে ১ লক্ষ টন এবং উত্তরবঙ্গ দিয়ে ১ লক্ষ টন। উত্তরবঙ্গ দিয়ে আলু যাবে অসমে। দক্ষিণবঙ্গের আলু যাবে ঝাড়খণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও ওডিশায়।
এক সপ্তাহ পর ফের এই ব্যাপারে রিভিউ-বৈঠক হবে। যদি দেখা যায়, অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি পরিমাণ আলু বাইরে পাঠানো হয়েছে অথবা এই সময়ের মধ্যে আলুর দাম কলকাতা বা রাজ্যে কেজি প্রতি ৩০ টাকার বেশি হয়েছে, তা হলে রাজ্য তখন অনুমোদন বাতিল করতে পারে।
তবে ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট রাজ্য যে কোনও অবস্থাতেই মেনে নেবে না, সেটা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানিয়ে দেন। আলু ব্যবসায়ীরা জানান, তাঁরা ধর্মঘট থেকে সরে আসছেন। কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্না জানিয়েছেন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী আলু পাঠানোর অনুরোধ করলে তবেই সে রাজ্যে আলু পাঠানো হবে।
গত ৯ জুলাই থেকে আলু নিয়ে সঙ্কট চলছে। ওই দিন আনাজের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে তিনি আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভিন্ রাজ্য এবং পড়শি দেশে আলু পাঠানো বন্ধ করার নির্দেশ দেন। তার পরেও ব্যবসায়ীদের একাংশ ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠাচ্ছিলেন। কিন্তু পুলিশ আলু বোঝাই ট্রাক আটকে দেয়।
জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে আলুর পাইকারি ব্যবসায়ীরা পাঁচ দিন ধরে ধর্মঘট করেন। তাঁরা হিমঘর থেকে আলু তোলেননি। ফলে, কলকাতা-সহ রাজ্যের অন্যত্র আলুর সঙ্কট দেখা দেয়। পাল্লা দিয়ে বাড়ে দামও। পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার ও কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্না আলু ব্যবসায়ীদের সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার পরেই ধর্মঘট ওঠে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, সেই বৈঠকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হবে। কিন্তু তার পরেও রাজ্যের সীমানায় আটকে থাকা আলু বোঝাই ট্রাক পুলিশ না-ছাড়ায় সোমবার ফের ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল।
উত্তরবঙ্গের আলু ব্যবসায়ীরা ধর্মঘট না-করায় এ দিনের বৈঠকে তাঁদের প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও যে ব্যবসায়ীরা লুকিয়ে বাইরে আলু পাঠিয়েছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাতে সরকারি কর্মীরা জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাঁদের বিরুদ্ধেও।