স্টাফ রিপোর্টার: অঙ্ক মিলছে না স্বাস্থ্যভবনের। অঙ্ক মিলছে না আর জি করের। তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস ধর্ষণ-খুনের (RG Kar Doctor Death) দশদিন পার, কিন্তু ‘সন্দেহভাজন’ দুই পিজিটির কোনও খোঁজ নেই।
খুন-ধর্ষণের তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি সিবিআই। কিন্তু কলেজ ও হাসপাতাল চলে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর, মানে স্বাস্থ্যভবনের তদারকিতে। গত কয়েকদিন স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে আর জি করের সব চিকিৎসক ও পড়ুয়াদের শরীর-স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়া হয়েছে। যাঁরা কর্মবিরতিতে, তাঁদেরও কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, তারও পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সংগ্রহ হচ্ছে। সেই সময়েই জানা গিয়েছে, ৯ আগস্ট রাতে নারকীয় ওই ঘটনার পর দুই পিজিটি আর কলেজে আসেননি। এঁদের এক জন মহিলা চিকিৎসক, অন্যজন তাঁর পুরুষবন্ধু। মহিলা চিকিৎসক চেস্ট মেডিসিনের ও তাঁর ওই বন্ধু অর্থোপেডিকের পিজিটি। দু’জনেই দ্বিতীয় বর্ষের। যিনি খুন হয়েছেন, তিনিও ছিলেন দ্বিতীয় বর্ষের পিজিটি। প্রশ্ন উঠেছে, ওঁকে খুন ও নির্যাতনের সঙ্গে নিখোঁজদের কোনও যোগ নেই তো?
দুই পিজিটি চিকিৎসক কেন আসছেন না?
কর্মবিরতিতে শামিল চিকিৎসকদের বড় অংশের কাছে উত্তর নেই। বলতে পারেনি স্বাস্থ্যভবনও। স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা ডা.কৌস্তভ নায়েক বলেছেন, “কেন্দ্রীয় এজেন্সি তদন্ত করছে। কিন্তু খবর পেয়েছি সেদিনের ঘটনার পর দুই পিজিটিকে আর কলেজে দেখা যায়নি।” আর জি কর সূত্রে খবর, হাড়হিম করা খুনের বেশ কিছুদিন আগেই নিহত তরুণীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। কিছুদিন কথাও বন্ধ ছিল। তখনকার মতো বিষয়টি মিটেও যায়। কিন্তু ৯ আগস্ট নৃশংস খুন ও ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তাঁদের দু’জনকে কলেজের চৌহদ্দির মধে্যই দেখা যায়নি।
ইতিমধ্যে জল অনেকদূর গড়িয়েছে। প্রায় অর্ধেক ইন্টার্ন বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। বাড়ি ফিরে গিয়েছেন পিজিটিরাও। একমাত্র যাঁদের দূরে বাড়ি, তাঁরাই হাসপাতালে আছেন। স্বাস্থ্য ভবনের তথ্য বলছে, সব মিলিয়ে আর জি করে প্রায় সাড়ে পাঁচশো পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি রয়েছেন। ঘটনা হল আর জি করের পিজিটিরা বায়োমেট্রিক্স উপস্থিতির আওতায় পড়ে না। কাজের শুরু অথবা শেষে বিভাগীয় প্রধানের চেম্বারে উপস্থিতির সই করে।
উল্লেখ্য, খুন ও ধর্ষণের পরেই তরুণীর মা বলেছিলেন মেয়ে কলেজ যেতে চাইত না। এমনকী কলেজ চত্বরে বাইকে ধাক্কায় আহত হওয়ার পরে বাড়িতে জানালেও এই নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও অভিযোগ জানাতে চাননি নিহত তরুণী। আর এখানেই প্রশ্ন উঠেছে দু’টি ঘটনার মধ্যে কোনও যোগ নেই তো? যদিও কোনও সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিচ্ছে না স্বাস্থ্যভবন। সরকারি কর্তাদের অভিমত, কেন্দ্রীয় এজেন্সি তদন্ত করছে তাই আলাদা করে কিছু করার সুযোগ নেই। তদন্তের গতিপ্রকৃতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।