নির্যাতিতার দেহ 'তড়িঘড়ি পোড়ানো' তত্ত্ব নিয়ে মুখ খুললেন শ্মশান ম্যানেজার
এই সময় | ২১ আগস্ট ২০২৪
'এত কম বয়স। তার সঙ্গে এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে শুনে মনটা কেঁপে উঠেছিল। তাই সে দিন অন্যদের অনুরোধ করেছিলাম যাতে ওঁর পরিবারকে আগে দাহকাজ সম্পন্ন করার সুযোগ করে দেন।' আরজি কর কাণ্ডে মুখ খুললেন পানিহাটির শ্মশান ম্যানেজার ভোলানাথ পাত্র।তিনি জানান, সংবাদমাধ্যম থেকে আরজি করের ঘটনা প্রসঙ্গে আগেই জেনেছিলেন তিনি। তরুণীর দেহ শ্মশানে আনার আগে গোটা এলাকা মুড়ে ফেলা হয়েছিল কড়া নিরাপত্তায়। আরজি করের ঘটনার পর একাধিক তত্ত্ব সামনে আসে। সেখানে দাবি উঠেছিল, তড়িঘড়ি দেহ সৎকার করা হয়। যদিও সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন শ্মশান ম্যানেজার ভোলানাথ পাত্র। তিনি বলেন, 'ওই দিন খবরটা জানার পর মন কেঁপে উঠেছিল। তরুণীর দেহ সৎকারের জন্য এখানে আনা হয়। তবে তার আগে দুই জনের দেহ ছিল। আমরা চেয়েছিলাম ওই তরুণীর পরিবারকে যেন অপেক্ষা করতে না হয়। সেই জন্য আগে রেজিস্ট্রার করা দুই পরিবারকে অনুরোধ করেছিলাম। তাঁরাও রাজি হয়ে যান।'
ভোলানাথ আরও বলেন, ‘সেই সময় আমি ওঁর মাকে দেখেছিলাম। কেন দু’জনের আগে মেয়েকে দাহ করা হয় তখন এই নিয়ে কোনও প্রশ্ন তিনি করেননি। আমরা চেয়েছিলাম ওঁর পরিবারকে আগে ছেড়ে দিতে। মানসিকভাবে তাঁদের সাহায্য করতে চেয়েছিলাম। সেই সময় শ্মশানের বাইরেও অনেক ভিড় হয়েছিল। যদিও তা পুলিশ সামাল দেয়।’ দাহকাজ প্রসঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে এই প্রসঙ্গে তাঁদের কোনও যোগাযোগ হয়নি বলেই দাবি করেছেন তিনি। ভোলানাথ পাত্রের দাবি অনুযায়ী, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করেই সামনে থাকা দুই জনের আগে তরুণীকে দাহ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ভোলানাথ আরও বলেন, ‘আমিও আরজি করের ঘটনায় ন্যায় বিচার চাইছি। প্রত্যেক মানুষ চাইছেন এই ঘটনার দ্রুত বিচার হোক। দোষীরা শাস্তি পাক।’
উল্লেখ্য, গত ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ থেকে এক তরুণী চিকিৎসকদের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ‘যৌন হেনস্থা’-র কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শরীরে বেশ কিছু অংশে রক্ত জমাট বেঁধে থাকার প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি নির্যাতিতার গাল, ঠোঁট, নাক, ডান চোয়াল, চিবুক, গলা, বাঁ হাত, বাঁ কাঁধ, বাঁ হাঁটু, গোড়ালি এবং যৌনাঙ্গে ক্ষতচিহ্নও ছিল বলে উল্লেখ রয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে।