বুদ্ধদেবের স্মরণসভার জন্য তাঁর লেখা বই অতিরিক্ত ছাপা হচ্ছে, পুজোয় পৃথক সঙ্কলনেরও পরিকল্পনা
আনন্দবাজার | ২১ আগস্ট ২০২৪
প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্মরণসভা হবে বৃহস্পতিবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে। সিপিএম রাজ্য কমিটি আহূত সেই স্মরণসভায় বুদ্ধদেবের লেখা বইয়ের বিশেষ চাহিদা থাকবে ধরে নিয়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কয়েক হাজার কপি ছাপল সিপিএমের প্রকাশনা সংস্থা। সংস্থার কর্ণধার অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী বুধবার জানিয়েছেন, মূলত তিনটি বই বিশেষ ভাবে ছাপা হয়েছে। সেগুলি হল ‘স্বর্গের নীচে মহাবিশৃঙ্খলা’, ‘নাৎসি জার্মানির জন্ম ও মৃত্যু’ এবং ‘পুড়ে যায় জীবন নশ্বর’।
সংস্থার তরফে এ-ও জানানো হয়েছে যে, ‘এই আমি মায়াকভস্কি’ও ছাপতে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বুধবার বিকাল পর্যন্ত তা ছেপে আসেনি। চেষ্টা করা হচ্ছে সেটিও রাখার। বুদ্ধদেবের লেখা বইগুলি যাতে উৎসাহীরা কিনতে পারন, তা-ই বৃহস্পতিবার নেতাজি ইনডোরে একটি স্টলও রাখবে ওই সংস্থা।
২০১৮ এবং ২০১৯ সালের পুজোয় পর পর বুদ্ধদেবের দু’টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল। দু’টি বই-ই বামমহলে সমাদৃত হয়েছিল। বিক্রিও হয়েছিল দেদার। সরকার থেকে বামফ্রন্ট চলে যাওয়ার পর বুদ্ধদেবের লেখা দু’টি বই ‘ফিরে দেখা’ এবং ‘ফিরে দেখা ২’ সাড়া ফেলেছিল বাম কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। বহু বছর আগে বুদ্ধদেব যখন জ্যোতি বসুর মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন, তখন তাঁর লেখা নাটক ‘দুঃসময়’ বঙ্গ রাজনীতিতে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছিল। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তাঁর লেখা ওই দু’টি বই ছিল খানিকটা গবেষণাধর্মী রাজনৈতিক মূল্যায়ন।
আসন্ন পুজোতেও বুদ্ধদেবের লেখা প্রবন্ধের একটি সঙ্কলন প্রকাশ করার চেষ্টা করছে সিপিএমের প্রকাশনা সংস্থা। অনিরুদ্ধ বলেন, ‘‘প্রয়াত নেতার প্রকাশিত কিন্তু অগ্রন্থিত প্রবন্ধগুলিকে এক জায়গায় আনার কাজ চলছে। চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে শারদীয়ায় সেগুলি একটি সঙ্কলন আকারে প্রকাশ করা যায়।’’ গত ৮ অগস্ট সকালে পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে প্রয়াত হন বুদ্ধদেব। ওই দিন তাঁর দেহ রাখা হয়েছিল ‘পিস ওয়ার্ল্ডে’। পর দিন ৯ অগস্ট প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শেষযাত্রা হয়। তার পর দেহদান করা হয় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বুদ্ধদেবের শেষযাত্রায় বিপুল মানুষের ভিড় হয়েছিল। সিপিএমের আশা, বৃহস্পতিবার ভাল জমায়েত হবে। দলের বাইরের অংশের অনেক মানুষও বুদ্ধদেবের স্মরণসভায় যোগ দিতে পারেন বলে মনে করছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। সেই ভিড়ে বুদ্ধদেবের লেখা বইয়ের চাহিদা থাকবে বলে অনুমান প্রকাশনা সংস্থাটির। বুদ্ধদেব ছিলেন গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। পরে সেই সংগঠনই সর্বভারতীয় রূপ পায়। সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য কমিটির মুখপত্রে বুদ্ধদেবের যত লেখা প্রকাশিত হয়েছিল তার একটি সঙ্কলন প্রকাশিত হয়েছে বুধবার। যার উদ্বোধন করেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক তথা যুব সংগঠনের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।