এই সময়, কৃষ্ণনগর: মেয়ের প্রেমিককে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার ছকে সায় দিয়েছিল মা। তাতে মত ছিল দাদারও। সেই মতো তিন দুষ্কৃতীকে খুনের সুপারিও দেওয়া হয়। যদিও খুনের প্ল্যান সফল হয়নি। তবে এমনই অভিযোগে পুলিশ শেষপর্যন্ত গ্রেপ্তার করেছে ষড়যন্ত্রকারী মা ও দাদাকে। তবে মূল চক্রী নাজিবুল হককে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। নদিয়ার চাকদহের এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।তরুণীর মা গীতা আচার্য ও দাদা সৌরভ আচার্য ষড়যন্ত্রের কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি পুলিশের। তাদের দু’জনকে কল্যাণী আদালতে তোলা হলে দু’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। নাজিবুল ধরা না পড়লেও, যে তিন দুষ্কৃতীকে খুনের সুপারি দেওয়া হয়েছিল, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
কিন্তু কেন এমন ষড়যন্ত্র?
পুলিশের দাবি, তরুণীর মা ও দাদা জানিয়েছে, নাজিবুল তাদের অর্থসাহায্য করত। কিন্তু তাকে বিয়ে করতে রাজি হননি তরুণী। তিনি তাঁর নিজের পছন্দের পুরুষকেই বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। অন্য কারও সঙ্গে মেয়ের বিয়ে হলে, টাকা আসা বন্ধ হয়ে যাবে ভেবেই এই ষড়যন্ত্রে মত দিয়েছিল তারা।
পুলিশ জানতে পেরেছে যে, ২০১৭ সালে তরুণীর বিয়ে হলেও বছর দুয়েকের মধ্যেই ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর মুর্শিদাবাদের লালবাগে তাঁকে বার ডান্সারের কাজ পাইয়ে দেয় নাজিবুল। সেই থেকে তরুণীর পরিবারের যাবতীয় খরচ নাজিবুলই চালাতো বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে তরুণীর সঙ্গে মদনপুরের এক যুবক মৃগাঙ্ক বর্মনের সম্পর্ক তৈরি হয়।
রানাঘাট জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, লালবাগের নাজিবুল হক তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেও, সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে তরুণী তাঁকে জানিয়ে দেন, মদনপুরের যুবককেই বিয়ে করবেন তিনি। এ নিয়ে নাজিবুলের সঙ্গে চরম ঝামেলা হয় তাঁর।
সেই রাগে তরুণীকে সরাসরি শাস্তি না দিয়ে তাঁর প্রেমিককে খুনের ছক কষে নাজিবুল। আর টাকার লোভে সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায় তরুণীর মা ও দাদা। তিন দুষ্কৃতীকে সুপারি দেয় নাজিবুল। কিন্তু টের পেয়ে প্রেমিককে সাবধান করে দেন তরুণী। প্রেমিকের অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে চাকদহ থানার পুলিশ।