দেব গোস্বামী, বোলপুর: আর জি কর কাণ্ডের মাঝেই ফের রাজ্যে ধর্ষণের অভিযোগ। মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে গোয়ালঘরে নিয়ে গিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ করার অভিযোগ এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বোলপুর থানার বাহিরী-পাঁচশোয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের করিমপুর গ্রামে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৭ আগস্ট দুপুরে। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে গৃহবধূকে ওই যুবক কুপ্রস্তাব দিত। প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় পরিত্যক্ত গোয়াল ঘরে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। এমনকি যৌনাঙ্গে বন্দুক ঢুকিয়ে নৃশংস অত্যাচার চলে বলেও অভিযোগ। নির্যাতিতার স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। ঘটনাটি জানাজানি হতেই গৃহবধূ ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাও করে। তিনদিন ধরে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি তিনি। বৃহস্পতিবার বোলপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা নিজেই৷ অভিযুক্ত ফিরোজ খাঁ ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবেই পরিচিত। ঘটনা জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ৷
অভিযোগ, গ্রামেরই একটি পরিত্যক্ত গোয়াল ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এমনকি তাঁর যৌনাঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ওই গৃহবধূর হাত-পা বেঁধে নগ্ন অবস্থায় বেশ কয়েকটি ছবি মোবাইলে তোলা হয়। সেই সময় নির্যাতিতা গৃহবধূর চার বছর বয়সি পুত্রসন্তান ঘটনাস্থলে চলে আসে। সে চিৎকার করতে শুরু করে। অভিযুক্ত পালিয়ে যায়। লোকলজ্জার ভয়ে গত কয়েকদিন ধরে অভিযোগ জানাতে পারেননি ওই গৃহবধূ। এমনকি আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন। নির্যাতিতার দাবি, “রাস্তাঘাটে বেরলেই কুপ্রস্তাব দিত,বিরক্ত করত ফিরোজ। কখনও টাকাপয়সা, কখনো দামি জিনিসের লোভ দেখাত। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে প্রাণনাশের ভয় দেখাত। জল আনতে গিয়েছিলাম একা পেয়ে পাশেই গোয়ালঘরে নিয়ে গিয়ে হাত-পা বেঁধে শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণ করে। আমার চার বছরের ছেলেকেও বস্তা চাপা দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। সম্মান বাঁচাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলাম। বর্তমানে আমি খুবই অসুস্থ অবস্থায় বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দোষী গ্রামেরই যুবক ফিরোজ খাঁয়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবির জন্যই অভিযোগ জানিয়েছি বোলপুর থানায়।”
গৃহবধূর স্বামী নাসিরউদ্দিন খান জানান,”আমি ছিলাম না। বাইরে কাজে গিয়েছিলাম। ঘটনা ঘটার কদিন পরে আমি জানতে পারি। আমার স্ত্রী বাড়ির পাশেই কলতলায় খাবার জল আনতে গিয়েছিল। সেই সময় রাস্তায় লোকজন না থাকায় মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে একটি ফাঁকা গোয়াল ঘরে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করে। চিৎকার করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। সেই সময় চার বছরের পুত্রসন্তান চলে গেলে তাকেও বস্তা চাপা দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। চিৎকার চেঁচামেচিতে পালিয়ে যায়। এলাকার দুষ্কৃতী হিসেবেই পরিচিত যুবকের কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি চাইছি।” অভিযোগ পাওয়ায় পরই নির্যাতিতার শারীরিক পরীক্ষা-সহ তদন্ত শুরু করেছে বোলপুর থানার পুলিশ। অভিযুক্ত ব্যক্তি ফিরোজ খাঁয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,”আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।” পুলিশ অভিযুক্তর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।