• সৌরবিদ্যুৎ চালিত জলযান তৈরি সিএমইআরআইয়ের
    বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: সৌরবিদ্যুৎ চালিত জলযান তৈরি করে সাফল্য পেল দুর্গাপুরের সেন্ট্রাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা সিএমইআরআই। ভারত-ইউরোপীয় ইউনিয়নের যৌথ প্রজেক্টে তাদের তৈরি সোলার পাওয়ার ইলেক্ট্রিক বোটটি নদীতে তিন ঘণ্টা যাত্রী পরিবহণের ক্ষমতা রাখে। ১৬জন যাত্রী ও দু’জন ক্রু মেম্বার নিয়ে তা পারাপার করার ক্ষমতা রাখে। কোনও জ্বালানি খরচ ছাড়াই তিনঘণ্টা নদীতে দাপিয়ে বেড়ানোর ক্ষমতার পাশাপাশি তা চার্জ করার ব্যবস্থাও থাকবে। সেজন্য ব্যাটারির ব্যবস্থা থাকছে। এরফলে তিন ঘণ্টার পরও তা সচল রাখা সম্ভব। পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে এই গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই বিজ্ঞানীদের দাবি। তাঁরা জানিয়েছেন, কেরলে বদ্ধ জলাশয়ে সৌরচালিত বোট চলাচল করলেও নদীতে যেখানে জলের নিজস্ব স্রোত ও ঢেউ ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে সেখানে চলতে পারা বোট এই প্রথম তৈরি হল। মূলত সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার কথা বিবেচনা করেই ভারত সরকার ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই প্রজেক্টটি হাতে নিয়েছিল। তাতেই গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল সৌরবিদ্যুৎ চালিত বোট তৈরি, যা সুন্দরবনের জোয়ার-ভাটা আসা নদীতে চলতে পারবে। দুর্গাপুরের সিএসআইআর-সিএমইআরআইয়ের অধিকর্তা নরেশচন্দ্র মুর্মু বলেন, ভারত-ইউরোপীয় ‌ইউনিয়নের যৌথ প্রজেক্টে সোলার পাওয়ার ইলেক্ট্রিক বোট তৈরিতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে। 

    বিজ্ঞানীদের দাবি, টুইন হল ক্যাটামেরান টাইপের এই বোট। অর্থাৎ দু’টি হল বিশিষ্ট এই বোট নদীর জলের তরঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করে যাত্রা করতে সুবিধা পাবে। অন্যক্ষেত্রে সিঙ্গল হল ক্যাটামেরান বোট তৈরি হয়েছিল। এই পরিবর্তন করা হয়েছে। পাশাপাশি সোলার প্যানেলগুলিকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে যা তিন কিলোওয়াট শক্তি প্রদান করবে। তাই ১৬ জন যাত্রী নিয়েও নির্বিঘ্নে এটি নদীর স্রোত ও ঢেউ এড়িয়ে এগিয়ে যেতে পারবে। 

    জানা গিয়েছে, সুন্দরবনের ঘোড়ামারার প্রত্যন্ত এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। সেখানেই ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যৌথভাবে ‘রি এমপাওয়ার্ড’ বলে একটি প্রজেক্টের মাধ্যমে এলাকার উন্নয়নে অগ্রসর হয়েছে। সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষার জন্য পরিবেশ বান্ধব উপাদান দিয়ে নানা সামগ্রী তৈরি করে তা মডেল হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, বাণিজ্যিকভাবে এই উৎপাদন শুরু হলে বিপুল চাহিদার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এতে কোনও জ্বালানি খরচ নেই। অথচ ১৬ জন যাত্রী এমনকী সামগ্রী পরিবহণেও কাজে লাগানো যাবে। পাশাপাশি প্রচলিত জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে পরিবেশকে রক্ষাও করা যাবে। বিপুল পরিমাণ জ্বালানির খরচ বাঁচবে।

    সাম্প্রতিকালে একের পর এক সফল গবেষণার সাক্ষী থেকের বাংলার এই গবেষণামূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। করোনা পরিস্থিতিতে একাধিক সামগ্রী তৈরি পাশাপাশি ই-ট্রাক্টর তৈরি করেছে। অটোমেটিক ড্রেন ক্লিনিং মেশিন তৈরি করেছে। এবার তৈরি হল ইলেক্ট্রিক বোট।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)