• বিশ্বভারতীর ছাত্রীরা কতখানি নিরাপদে?
    বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বোলপুর: আরজি কর হাসপাতালে মহিলা ডাক্তারকে নৃশংস খুন করে ধর্ষণের ঘটনায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। অভিযুক্তদের কঠোরতম শাস্তির দাবিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এখনও প্রতিবাদ জারি রয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্বভারতীর ছাত্রীরা কতটা নিরাপদ, সেবিষয়ে খোঁজ নিলেন বীরভূম জেলার পুলিস সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়। মূলত জেলা পুলিস প্রশাসন ও বিশ্বভারতীর যৌথ উদ্যোগে বুধবার শান্তিনিকেতনের লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে ছাত্রী নিরাপত্তা সম্পর্কিত একটি আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন পুলিস সুপার। বিশ্বভারতীর তরফে ছিলেন ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাত। পাশাপাশি, বিশ্বভারতীর বিভিন্ন বিভাগের ছাত্রীরা ছিলেন। বিশেষত যাঁরা হস্টেলে থাকেন, তাঁদের ডাকা হয়েছিল। ছাত্রীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন রাজনারায়ণবাবু। বর্তমান প্রেক্ষাপটে পুলিসের এই আশ্বাস কিছুটা হলেও সাহস জোগাবে ছাত্রীদের। এমনটাই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। 

    কবিগুরুর ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতী। তাই রাজ্য সহ দেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে ছাত্রছাত্রীরা পঠনপাঠনের জন্য শান্তিনিকেতন আসেন। সঙ্গীত, কলা, ভাষা, শিক্ষা ও বিদ্যাভবনে প্রতিবছর হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী ভর্তি হন। বিশাল ক্যাম্পাস হওয়ার কারণে ছাত্রছাত্রীদের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে যাতায়াত করতে হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রেই শান্তিনিকেতনের নিরিবিলি ও শান্ত পরিবেশের সুযোগকে কাজে লাগায় দুর্বৃত্তরা। তাই দুপুর হোক বা সন্ধ্যা, ছাত্রীদের একা দেখতে পেলেই ছিনতাই, হেনস্তা, শ্লীলতাহানির ঘটনা মাঝেমধ্যে সামনে আসে। বেশ কিছুদিন আগে দিনেরবেলায় এক ছাত্রীকে সাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে তাঁর মোবাইল ও টাকা ছিনতাই করে পালায় এক দুষ্কৃতী। রক্তাক্ত ও গুরুতর জখম অবস্থায় শম্পা কর্মকার নামের সঙ্গীত ভবনের ছাত্রীকে ভর্তি করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পিয়ারসন মেমোরিয়াল হাসপাতালে।‌ তাই ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে সম্প্রতি ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাত বোলপুরের এসডিপিও রিকি আগরওয়ালকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানান। বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় জেলা পুলিস। তার প্রেক্ষিতে পুলিসের আহ্বানে এদিন একটি আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছাত্রীরাও পুলিসকে সামনে পেয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। কলাভবনের আর্ট হিস্ট্রি বিভাগের ছাত্রী পৌলমি পাল ও নৃতত্ত্ববিদ্যা বিভাগের অপর্ণা মাহাত পুলিস সুপারকে বলেন, ছাত্রছাত্রীদের জন্য ক্যাম্পাসে অনেক মার্কেট রয়েছে। তার মধ্যে রতনপল্লি বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু সন্ধ্যা হতেই সেখানে নেশার আসর বসে। স্থানীয় যুবকরা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বাইক চালিয়ে যায়। এমনকী কটূক্তি ও হেনস্তাও করে সমাজবিরোধীরা। আমরা এই এলাকায় থাকি। ফলে সন্ধ্যা বা রাত হলে একা যাতায়াত করতে প্রবল সমস্যায় পড়তে হয়‌। এছাড়াও অন্যান্য ছাত্রীরা তাঁদের নিজেদের অভিজ্ঞতার কথাও তুলে ধরেন। তার প্রেক্ষিতে পুলিস সুপার বলেন, ছাত্রীদের বিভিন্ন সময় নানা সমস্যার কথা জানতে পেরেছি। বেশকিছু অভ্যন্তরীণ সমস্যার কথাও তাঁরা জানিয়েছেন। নিরাপত্তায় যাতে কোনও খামতি না থাকে, সেব্যাপারে তাঁদের নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি, শান্তিনিকেতন ও রামপুরহাটে সাইবার সেল করার কথাও তিনি এদিন জানান।
  • Link to this news (বর্তমান)