• গদাইচরে এখনও আটকে শতাধিক
    বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, মানিকচক: তিনদিন আগে প্রশাসন উদ্ধার করে বাঁধে থাকার ব্যবস্থা করলেও পর্যাপ্ত ত্রাণ এবং খাবার না পেয়ে জলবন্দি বাড়িতে ফিরে যেতে বাধ্য হলেন দুর্গতরা। ভূতনির গদাইচরে আটকে থাকা শতাধিক বাসিন্দা এখন দুর্ভোগের জন্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করছেন। যদিও প্রশাসনের দাবি, গদাইচরের বাসিন্দাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। পর্যাপ্ত ত্রাণ দেওয়া হয়েছিল দুর্গতদের।

    স্থানীয় বাসিন্দা গঙ্গারাম মাহাতো বলেন, বাঁধের উপর থাকার ব্যবস্থা করলেও খাবার, পানীয় জল বা শৌচাগারের ব্যবস্থা করেনি প্রশাসন। আমরা দু’দিন সেখানে না খেয়ে থাকার পর বাধ্য হয়ে গদাইচরে ফিরে এসেছি। সবাই জলের মধ্যেই বাঁশের মাচা করে থাকছি। নদীতে মাছ ধরে খেয়ে দিন কাটছে আমাদের।

    গদাইচরে প্রায় ৪০০ পরিবারের বাস। প্রতি বছরই গঙ্গা নদীর জল বাড়লে বনভাসি অবস্থা হয় তাঁদের। ব্যতিক্রম হয়নি এবছরও। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জলস্তর বৃদ্ধি হওয়ায় এলাকা ডুবেছে। বিপদ থেকে বাঁচতে ঘরবাড়ি ছেড়ে বাসিন্দারা আশ্রয় নিয়েছিলেন বাঁধে। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৫ দিন আগে তাঁদের বেশকিছু ত্রিপল ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে গঙ্গার জল বাড়তেই বাধ্য হয়ে উঁচু বাঁশের মাচায় ত্রিপল টাঙিয়ে পরিবার নিয়ে বাস করতে শুরু করেন অনেকে। এর মধ্যে খাদ্য সঙ্কট দেখা দেওয়ায় গত রবিবার ব্লক প্রশাসনের নির্দেশমতো গদাইচরের বাসিন্দাদের উদ্ধার করে কেশরপুর বাঁধে নিয়ে আসার জন্য নেমে পড়ে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর বিশেষ দল। সঙ্গে ছিলেন ব্লক প্রশাসন, পুলিস আধিকারিকরা। এছাড়া মালদহ জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি বিশ্বজিৎ মণ্ডলও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে এলাকাবাসীদের আশ্বস্ত করা হয় বাঁধের ওপর তাঁদের থাকা এবং খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। এই আশ্বাসেই শতাধিক পরিবার চলে যায় বাঁধের উপর।

    এবিষয়ে পঞ্চায়েত সদস্য সঞ্জীব মাহাতোর মন্তব্য, ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া ত্রাণ আমরা পাইনি। আমাদের উদ্ধার করে বাঁধে নিয়ে গেলেও খাবার দেওয়া হয়নি। পরে হিরানন্দপুর পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হয়ে এলাকাবাসীর জন্য খিচুড়ির ব্যবস্থা করেছিলাম। সেটুকুই দেওয়া হয়েছিল। তারপর আর কিছু পাইনি। গ্রামবাসীরা উপায় না দেখে নিজের গ্রামে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

    মানিকচকের বিডিও অনুপ চক্রবর্তী বলেন, গদাইচরের দুর্গতদের প্রায় ছ’শো ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। ১০ কুইন্টাল চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে সমস্ত পরিবারকে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সাহায্যে তাঁদের উদ্ধার করে সুরক্ষিত জায়গা বাঁধে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সেখানে দু’দিন থাকার পর অজানা কারণে ফিরে যান বাসিন্দারা। আমরা তাঁদের ফিরে আসার অনুরোধ জানিয়েছি।  না এলে গ্রামে ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে।  বাড়ি জলমগ্ন। তাই মাচাতেই আশ্রয়। - নিজস্ব চিত্র। 
  • Link to this news (বর্তমান)