• ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে আউটডোর পরিষেবা, কমছে রোগীদের দুর্ভোগ
    বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: রাজ্যের অন্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মতো উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আউটডোর পরিষেবাও ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে চিকিত্সকদের কর্মবিরতিতে আউটডোর পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছিল। চিকিৎসা না পেয়ে দিনের পর দিন রোগীরা নাজেহাল হয়ে ফিরে গিয়েছেন। বুধবার সেই চিত্র অনেকটাই বদলেছে। যা স্বস্তি দিয়েছে রোগীদের। 

    এদিন প্রতিটি আউটডোরে রোগীদের ভিড় উপচে পড়ে। জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলনে থাকলেও সিনিয়র ডাক্তার এবং সার্ভিস পিজিটিরা আউটডোরে বসায় রোগীদের হয়রানি কমেছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বিভিন্ন আউটডোরে তিন হাজারেরও বেশি রোগী দেখা হয়েছে। যা স্বাভাবিকের তুলনায় গড়ে মাত্র পাঁচশো কম। 

    এই ব্যাপারে হাসপাতাল সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক বলেন, সিনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে সার্ভিস পিজিটি অর্থাৎ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত ডাক্তার, যারা পোস্ট গ্র্যাজুয়েট করছেন তাঁরা আউটডোরে বসছেন। এতে রোগীদের দুর্ভোগ কমেছে।

    পিজিটি এবং জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই প্রতিটি আউটডোরে ডাক্তারের সংখ্যা কম। একারণে রোগীদের একটু বেশিক্ষণ লাইনে অপেক্ষা করতে হয়েছে। তবে রোগীদের কোনও ক্ষোভ নেই। সকলেরই বক্তব্য, ডাক্তার দেখাতে পেরেছি। 

    বুধবার দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চিকিত্সক দেখাতে পেরে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। ইসলামপুর থেকে এসেছিলেন তাহের খান। তাঁর মেয়ের পায়ে সংক্রমণ হয়েছে। তাহেরের কথায়, চিকিত্সকরা বিচারের দাবিতে আন্দোলনে বসেছেন। তাই এতদিন আসার কথা ভাবতে পারিনি। সোমবার থেকেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে খবর পেয়েই এদিন সকাল সকাল এসেছিলাম। ঠিকমতোই ডাক্তার দেখাতে পেরেছি।

    জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের বেলাকোবা সুনীল রায় এসেছিলেন স্ত্রীকে নিয়ে। মেডিসিন আউটডোরের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, গত শুক্রবার এসে ফিরে যেতে হয়েছিল। তবে এদিন স্ত্রীকে চিকিত্সককে দেখাতে পেরে স্বস্তি পেলাম। লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে। কিন্তু কোনও দুর্ভোগ হয়নি। 

    এদিকে আর জি কর কাণ্ডের জেরে চিকিত্সদের নিরাপত্তার দাবি মতো ওয়ার্ডে তাঁদের জন্য রেস্টরুম, নতুন করে শৌচালয় তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই ব্যাপারে হাসপাতাল সুপার বলেন, স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশমতো প্রতিটি ওয়ার্ডে চিকিত্সকদের রেস্টরুম এবং শৌচালয় তৈরি করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে পূর্তদপ্তরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে এই কাজ করবে। 

    এদিকে আউটডোরে পরিষেবা চললেও চিকিত্সক ধর্ষণ-খুনে বিচারের দাবিতে মেডিক্যালে আন্দোলন অব্যাহত। চিকিৎসকদের অন্যতম নেতা ডাঃ শাহরিয়ার আলম বলেন, আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলনের জেরে অবশেষে কর্তৃপক্ষের এই ব্যাপারে নজর পড়েছে। এখনও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে রাতের ডিউটিতে থাকা চিকিত্সকদের রেস্টরুম নেই। শৌচালয়গুলি ব্যবহারের অযোগ্য। এই কারণে রাতে কর্তব্যরত মহিলা চিকিত্সকদের শৌচকর্ম করতে হস্টেলে যেতে হয়। কর্তৃপক্ষ শুরু থেকেই এই ব্যাপারে নজর দিলে পরিকাঠামোগত সমস্যা আগেই সমাধান হয়ে যেত। 

     নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)