• চিহ্নিত ১৫ বিপজ্জনক বাড়ি, আবার পাঠানো হচ্ছে নোটিস
    বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: শহরের সমাজপাড়া মোড়ে বিপজ্জনক বহুতলের অংশ ভেঙে পড়ার পর টনক নড়ল পুরসভার। পুর এলাকায় কতগুলি এ ধরনের বিপজ্জনক বাড়ি বা বহুতল রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে রাস্তায় নামলেন খোদ চেয়ারপার্সন, ভাইস চেয়ারম্যান সহ পুরসভার কাউন্সিলার ও আধিকারিকরা। এতদিন বিপজ্জনক বাড়ির মালিককে নোটিস ধরিয়ে হাতগুটিয়ে বসে থাকত পুরসভা। কেউ সেই নোটিসের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর দিতেন, কেউবা দিতেন না। পুরসভাও কোনও পদক্ষেপ নিত না। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে যেভাবে জনবহুল মার্চেন্ট রোডের উপর পাঁচতলা বিশিষ্ট একটি পরিত্যক্ত ভবনের কার্নিশ ভেঙে পড়ে, তাতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতেই পারত। ফলে বিষয়টি নিয়ে আর চুপ করে বসে থাকতে নারাজ পুরসভা। 

    বুধবার সমাজপাড়া মোড়ে বিপজ্জনক ‘মুক্তা ভবন’ পরিদর্শনে এসে পুরসভার চেয়ারপার্সন পাপিয়া পাল বলেন, শহরে ১২টি বাড়িকে বিপজ্জনক বলে নোটিস ধরানো আছে। আরও তিনটি বাড়িকে নোটিস দেওয়া হবে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, এই বাড়িগুলিতে হয় মালিক-ভাড়াটিয়া ঝামেলা, নতুবা শরিকি বিবাদ। কেউ আবার অন্য অজুহাতে পুরসভায় চিঠি দিয়ে বাড়ি সংস্কারের সময় চাইছেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও সেই বিপজ্জনক বাড়ি সংস্কার করা হচ্ছে না। ফলে ঝুঁকি বাড়ছে। দ্রুত ওইসব বিপজ্জনক বাড়ি বা বহুতল সংস্কার বা ভেঙে ফেলা না হলে পুরসভা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। 

    পুরসভার নিজস্ব স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার নেই। বিপজ্জনক বাড়িগুলিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে পুর কর্তৃপক্ষকে। চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সন্দীপ মাহাত বলেন, কোনও বাড়িকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে গেলে স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে সার্টিফাই করাতে হয়। কিন্তু পুরসভার কোনও নিজস্ব স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার নেই। ফলে কে ঘোষণা করবে কোন বাড়িটি পরিত্যক্ত? কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায় তা দেখা হচ্ছে।

    পুরসভা সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে সমাজপাড়া মোড়ে যে বিপজ্জনক বহুতলের অংশ ভেঙে পড়ে, সেটি জলপাইগুড়ি শহরের প্রথম পাঁচতলা ভবন। দীর্ঘদিন ধরে বাড়িটি পরিত্যক্ত। চেয়ারপার্সনের দাবি, এই বাড়িটি সংস্কারের জন্য মালিককে পুরসভার তরফে প্রথম ২০২১ সালে একবার নোটিস ধরানো হয়। গত তিনমাস আগে আবারও নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরও বাড়ির মালিক ব্যবস্থা নেয়নি। বাড়ির মালিক রীতা রায়ের ছেলে অবশ্য পুরসভাকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পুর চেয়ারপার্সন জানিয়েছেন, আপাতত বাড়িটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিয়েছেন, মুক্তা ভবনের টপ ফ্লোরের অবস্থা খুবই খারাপ। শীঘ্রই সেটি ভেঙে ফেলতে হবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বোর্ড মিটিং করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)