• পুকুর এবং চৌবাচ্চার মিষ্টিজলেই পরীক্ষামূলক ইলিশ চাষ উত্তরবঙ্গে
    বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গে মানুষের পাতে দ্রুত আসতে চলেছে মিষ্টি জলের ইলিশ। পুকুরের জলেই হচ্ছে ইলিশ মাছের চাষ। যার স্বাদ ও গন্ধ টেক্কা দিতে পারবে ডায়মন্ডহারবার কিংবা দিঘার ইলিশকে। এমনটাই দাবি করছেন দিঘির জলে ইলিশ মাছ চাষ করা মৎস্য চাষিরা। উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি ও উত্তর দিনাজপুর জেলায় এই ইলিশের চাষ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। 

    প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক চাষের পর সফলতাও মিলেছে হাতেনাতে। ইলিশ চাষিদের দাবি, চৌবাচ্চায় একইঞ্চি ইলিশের চারাপোনা একবছরে এককেজি ওজনের প্রমাণ সাইজের হয়েছে। সেই মাছের স্বাদ ও গন্ধ কোনও অংশেই ডায়মন্ডহারবার কিংবা দিঘার ইলিশের থেকে পিছিয়ে নেই। তবে সাবেক ইলিশ মাছের থেকে এই ইলিশের কাঁটা অনেকটাই কম। পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হওয়াতে ইলিশের থেকে বাজার দামও অনেকটা কম থাকবে। তবে এই ইলিশের স্বাদ পেতে এখনও বছর খানেক সবুর সইতে হবে। চৌবাচ্চায় পরীক্ষামূলক ইলিশ চাষে সাফল্য আসার পর পুকুরে শুরু হয়েছে এই চাষ। আগামী বছরের মধ্যেই অল্প পরিমাণে উত্তরের দুই জেলার বাজারে মিলবে মিষ্টি জলের ইলিশ। 

    ২০২৩ সাল থেকে নিজের বাড়ির ৮ ফুট চওড়া ৪ ফুট গভীর চৌবাচ্চায় ইলিশের চাষ শুরু করেছেন উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর মহকুমার শ্রীকৃষ্ণপুরের মৎস্য চাষি পলাশচন্দ্র পাল। প্রথমে তিনি ৫০টি এক ইঞ্চি ইলিশের চারা চৌবাচ্চায় ছাড়েন। ১৫টি মারা যায়। বাকি ৩৫টি ইলিশের পোনা বছর ঘুরতেই এককেজি ওজনের হয়ে যায়। সেই মাছই তিনি নিজের ঘনিষ্ঠদের মধ্যে বিতরণ করেছেন। তাঁরা খেয়ে প্রত্যেকেই প্রশংসা করেছেন। 

    বুধবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি প্রদর্শনীতে ইলিশ মাছের চারা নিয়ে এসেছিলেন পলাশবাবু। সেই প্রদর্শনীতে মিষ্টি জলের ইলিশ দেখতে উপচে পড়ে ভিড়। সেখানেই তিনি সকলের সামনে তুলে ধরেন মিষ্টি জলের ইলিশের স্বাদ ও গন্ধের অতুলনীয় বর্ণনা। বলেন, ভূবণেশ্বর থেকে মিষ্টি জলের ইলিশের চারাপোনা কিনে এনেছিলাম। এক ইঞ্চি সাইজের প্রতি পোনার দাম ছিল ৫০ টাকা। সেগুলি চৌবাচ্চায় রেখে বড় করি। এক বছরেই সেই মাছ এককেজি সাইজ হয়েছে। পলাশবাবুর সঙ্গে আগেই পরিচয় হয়েছিল গজলডোবার মৎস্য চাষি রণজিৎ দাস, সুজিত দাস, চৈতন্য বাড়ুইয়ে। খোঁজখবর নিয়ে তাঁরাও ইলিশের চারা সংগ্রহ করে এনেছিলেন। তাঁরা জানান, কিছু ইলিশের পোনা পুকুরে ছাড়া হয়েছে। আগামী বছর পুজোর আগে বাজারে ছাড়া যাবে। 

    অবসরপ্রাপ্ত সহ মৎস্য অধিকর্তা সুনীলচন্দ্র বর্মন বলেন, মোহনার দিকে নোনতা জলে ইলিশ চাষ করে কিছুটা সফলতা মিলেছিল। পুকুরে কিংবা চৌবাচ্চায় কতটা নোনতা জল থাকবে তার উপর এর সফলতা মিলবে।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)