• ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রমাণেই মরিয়া সিবিআই
    বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সিবিআইয়ের তদন্ত কতদূর? আন্দোলনের ভরকেন্দ্রেও কিন্তু এই প্রশ্ন দানা বাঁধতে শুরু করেছে। প্রত্যেকেই জানতে চাইছেন, ধৃত সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট কবে হবে? সঞ্জয় আর কার নাম বলেছে? এর একটিরও উত্তর সিবিআই এ পর্যন্ত দিতে পারেনি। উল্টে তারা খুঁজে চলেছে আড়ালের ‘ষড়যন্ত্র’। আর এই সমীকরণে তাঁদের প্রধান কুশীলব আর জি কর হাসপাতালের সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। সিবিআইয়ের দাবি, তদন্তের অভিমুখ ঘুরিয়েছেন তিনিই। কারণ তাঁরা জানতে পেরেছেন, সন্দীপই ঘটনাস্থল কর্ডন করতে পুলিসকে বাধা দিয়েছিলেন। উল্টে সেমিনার রুমে পড়ুয়া চিকিৎসকের দেহ পড়ে আছে শোনার পর প্রায় ১৫ জন ডাক্তারকে সেখানে পাঠান তিনি। তাঁরা দীর্ঘক্ষণ মৃতদেহ পর্যবেক্ষণ করেন। সিবিআই দাবি করছে, আর জি কর আউটপোস্টে কর্তব্যরত এক এএসআই জিজ্ঞাসাবাদে নতুন তথ্য দিয়েছেন। তাঁর দাবি, মৃতার যৌনাঙ্গে স্যালাইনের একটি পাউচ দেখেছিলেন তিনি। সেটি পরে পাওয়া যায়নি। এএসআই কীভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছন? কে তাঁকে খবর দেয়? ওই পুলিস অফিসার জানিয়েছেন, এক নিরাপত্তারক্ষী তাঁকে নিয়ে গিয়েছিলেন। তদন্তে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, খুনের পর ওখানে বেসিনে হাত ধুয়েছিলেন ধৃত সঞ্জয়। কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া ব্লু-টুথ নেকব্যান্ড? সিবিআইয়ের বক্তব্য, সঞ্জয় সেটা ঘটনাস্থলে ফেলে আসেনি। জেরায় সে নিজেই সে কথা জানিয়েছে। তাহলে সেটি সেমিনার রুমে পৌঁছল কীভাবে? তার উত্তর মিলছে না। 

    তবে সব কিছুর পরও সন্দীপ ঘোষকে ঘিরেই এখন তদন্তের জাল বুনতে চাইছে সিবিআই। ওই রাতে সেমিনার রুমে খাওয়া-দাওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলছে এজেন্সি। তাদের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে কোনও পাত্র পাওয়া যায়নি। এবং তরুণী যে খাবার অর্ডার করেছিলেন, তার প্যাকেটও সেমিনার রুমে বা ওয়েস্ট বক্সে মেলেনি। অফিসারদের প্রশ্ন, যে চারজন নির্যাতিতার সঙ্গে বসে খেয়েছিলেন, তাঁরা সবাই একসঙ্গে চলে গেলেন কেন? তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেও সন্তোষজনক উত্তর মেলেনি বলে দাবি সিবিআইয়ের। এরইমধ্যে শোনা যাচ্ছে, তরুণীর ওই সহকর্মীদের গোপন জবানবন্দির জন্য আদালতে আর্জি জানিয়েছে তারা। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি তাঁরা নতুন কোনও তথ্য দেবেন? যা তদন্তকারীদের সামনে বলতে চাইছেন না ওই ডাক্তার-নার্সরা? গোয়েন্দাদের ধারণা, দ্রুত ময়নাতদন্ত করে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়াই ছিল সন্দীপ ঘোষের লক্ষ্য। এমনকী, মৃত্যু শংসাপত্রেও তিনি ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’ লেখার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। পরে পরিস্থিতি বিগড়ে গেলে সন্দীপবাবু পিছু হটেন। কিন্তু এই গোটা ঘটনাক্রম কেন? মৃতদেহ দেখেই যেখানে বোঝা যাচ্ছিল, তরুণীকে খুন করা হয়েছে, সেখানে এমন কাণ্ড কেন করবেন সন্দীপবাবু? সঞ্জয়ই বা কোনও নির্দেশদাতার নাম করল না? উত্তর সিবিআই দেয়নি। উল্টে তাদের দাবি, সন্দীপই ঘটনাটি আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। এর নেপথ্যে অন্য কেউ থাকতেই পারে। অর্থাৎ, ষড়যন্ত্র। 
  • Link to this news (বর্তমান)