• প্রমাণ লোপাটের যুক্তি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের
    বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: সিবিআই তদন্ত কত দূর এগিয়েছে? সব ক্ষোভ বিক্ষোভের মধ্যে‌ও এই প্রশ্ন এখন জ্বলন্ত। খোদ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আজ, বৃহস্পতিবার তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেবে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তবে সিল করা খামে, গোপন নথি হিসেবে। কিন্তু কী থাকতে চলেছে সেই প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে? এই নিয়ে শুধু বাংলা নয়, দেশজুড়ে কৌতূহল চরমে। জল্পনা বলছে, সিবিআই তদন্তের অগ্রগতি আদতে খুব বেশি ইতিবাচক নয়। নতুন কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আটদিন হয়ে গেলেও বিষয়টি নিয়ে কোনও বিবৃতি দেয়নি তারা। ফলে তদন্ত নিয়ে হতাশা বৃদ্ধির পাশাপাশি সন্দেহও তৈরি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সিবিআইয়ের যাবতীয় খামতি ঢাকতে চেনা ছকে হাঁটল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বুধবার সর্বোচ্চ আদালতে এজেন্সি তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার প্রাক্কালে তাদের সাফ যুক্তি, সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাট হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই বিরোধীদের সন্দেহ, তাহলে কি কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে সামনে রেখে আদতে বৃহত্তর লক্ষ্যে রাজনৈতিক ঘুঁটি সাজাচ্ছে বিজেপি?

    গেরুয়া শিবিরের অন্যতম জাতীয় মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া যেমন সরাসরি বলেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই শীর্ষ স্তরের নির্দেশে নথি উধাও করেছে।’ তারপরই আবার বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তরুণ চুঘ বলেছেন, ‘আর জি করের নৃশংস ঘটনায় আমরা নির্যাতিতার বাবা মায়ের সঙ্গে আছি। যতদূর যেতে হয় আমরা যাব। আমরা জানতে চাই কেন সেদিনের সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাট করা হয়েছে? কার নির্দেশে সমস্ত প্রমাণ লোপাট করা হল?’ তাঁর সাফ কথা, মুখ্যমন্ত্রীর কারণেই বাংলার মানুষের জীবন ও সম্মান এখন গভীর সঙ্কটে। কিন্তু তাতে অবশ্য সিবিআইয়ের তদন্তের শ্লথ গতি নিয়ে প্রশ্ন কমছে না। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেন, ‘বিজেপির শাখা সংগঠন সিবিআই। যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়ে জবাব চান বিচার কবে পাব?’

    আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতা পুলিসও আর জি করে হামলার ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট জমা দেবে সুপ্রিম কোর্টে। একসপ্তাহ আগে তাদের হাত থেকে তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছিল সিবিআই। ঩তারপর থেকে  নতুন করে কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিসই। সিবিআই শুধু আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করেই চলেছে। বুধবার রাত পর্যন্ত তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হয়নি। এখন দু’টি প্রশ্নের উত্তরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা দেশ। এক, সঞ্জয় রায় ছাড়া আর আর কেউ কি জড়িত ছিল এই  ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায়? থাকলে কতজন? দুই, সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাটের মাধ্যমে কাউকে আড়াল করা হচ্ছে? বস্তুত এই অভিমুখেই তদন্ত করছে সিবিআই। কিন্তু এখনও কোনও বিশেষ ‘ব্রেক থ্রু’ হয়নি। এর মধ্যেই বিজেপি নেতৃত্ব সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাটের প্রসঙ্গ তোলায় সন্দেহ বাড়ছে। এতদিন এই সন্দেহ ছিল অভিযোগের স্তরে। এবার নিশ্চিতভাবে বিজেপি নেতারা প্রশ্ন করছেন, কার নির্দেশে প্রমাণ লোপাট হল সেটা জানা দরকার! তবে কি নির্যাতিতার ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় সিবিআইয়ের বাহু বিভিন্ন দিকে সম্প্রসারিত হয়ে তদন্তকে দীর্ঘায়িত করতে চলেছে? কতদিন পর্যন্ত? ২০২৬?
  • Link to this news (বর্তমান)