• হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে সন্দীপের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জোড়া মামলা
    বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা:  আরও বিপাকে পড়ে গেলেন আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে এবার তাঁর বিরুদ্ধে জোড়া মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। এই দু’টি হল, আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে সরকারি নিষ্ক্রিয়তা এবং ইডি তদন্তের দাবিতে মামলা। 

    অনেক আগেই সন্দীপের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। এবার এনিয়ে সরাসরি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। বুধবার আখতারের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বিষয়টি নিয়ে বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের সিঙ্গল বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, তাঁর মক্কেল আখতার আলি রীতিমতো নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। আদালত মামলাটি দায়ের হয়েছে। এছাড়াও প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে এই সংক্রান্ত দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের হয়েছে। সেখানে মামলাকারীর আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত ডিভিশন বেঞ্চে প্রশ্ন তুলেছেন, খুন ও ধর্ষণ কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত চলছে। এর মাঝেই কেন আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে আলাদা করে সিট গঠন করা হল? বিষয়টির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইডি তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি। 

    পাশাপাশি হাইকোর্ট চত্বরে দাঁড়িয়ে সিঙ্গল বেঞ্চে মামলাকারী আখতার আলি বলেন, প্রথম থেকে ওঁর দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।  একসময় পড়ুয়ারা ওঁর বিরুদ্ধে অনশন কর্মসূচিও করেছে। মানব অঙ্গ পাচার থেকে টেন্ডার দুর্নীতি কিংবা পয়সা নিয়ে পড়ুয়াদের পাশ করিয়ে দেওয়া, ওঁর কাজের তালিকায় কিছুই বাকি ছিল না। 

    অন্যদিকে আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে সিট জেনেছে, সন্দীপ হাসপাতালের টেন্ডার নিজে নেওয়ার জন্য বকলমে তাঁর পরিচিত ও আত্মীয়দের দিয়ে একাধিক কোম্পানি খুলিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলির কাজের কোনও অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও তারা টেন্ডার পেয়ে আসছিল। শুধু তাই নয়, অন্য যে সমস্ত কোম্পানিকে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রাক্তন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে, সেই টাকা জমা করার জন্য আত্মীয়  পরিজনদের দিয়ে একাধিক  কাগুজে কোম্পানি খোলান। সেই কোম্পানিগুলির সঙ্গে ভুয়ো লেনদেন দেখিয়ে টাকা ঘুরপথে নিয়ে আসেন। এই ধরনের একাধিক অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সেগুলির বিষয়ে ব্যাঙ্কের কাছ চিঠিও দিয়েছেন তাঁরা।     

    এদিকে, সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করায় আর জি কর কাণ্ডে হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মূল মামলার শুনানি পিছিয়ে গেল। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর এই মামলার শুনানি হবে। তবে এদিনও জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি নিয়ে তাঁর দায়ের করা মামলার শুনানির আবেদন জানান চিকিৎসক কুণাল সাহা। কিন্তু প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘এ বিষয়ে আমরা আগেই চিকিৎসকদের অনুরোধ করেছি। সুপ্রিম কোর্টও বিষয়টি নিয়ে একটি পজিটিভ নির্দেশ দিয়েছে। ফলে এ ব্যাপারে আমাদের এখন আর কিছু বলার নেই।’ 

    এছাড়াও নির্যাতিতার ছবি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া নিয়ে এদিনও অভিযোগ জানিয়েছে মামলাকারীরা। তাঁদের দাবি, যে সমস্ত প্রোফাইল থেকে নির্যাতিতার ছবি ছড়িয়ে পড়ছে, সেসব প্রোফাইলের অস্তিত্ব নিয়ে তদন্ত প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে  ডিভিশন বেঞ্চ।
  • Link to this news (বর্তমান)