• রাজ্যে সব মেডিক্যাল কলেজে বসছে ৫ হাজার সিসি ক্যামেরা
    বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ৯ আগস্টের আগে সিসি ক্যামেরা চাইলেই প্রশ্ন ছুটে আসত হাজার গণ্ডা। স্বাস্থ্যভবন থেকে আসত প্রশ্ন, এমনকী হাসপাতালের ভিতরের নানা মহলও ‘প্রিভেসি’ বা ‘গোপনীয়তা’ লঙ্ঘিত হবে যুক্তি দেখিয়ে উষ্মা প্রকাশ করত। এক তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস হত্যা এবং ধর্ষণের পর গোটা পরিস্থিতিটাই পাল্টে গিয়েছে। শুধু স্বাস্থ্যভবনই নয়, ঘুম উড়েছে রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, উপ অধ্যক্ষ ও বিভাগীয় প্রধানদেরও। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে যে, রাজ্যের সব ক’টি মেডিক্যাল কলেজ মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজারের বেশি সিসি ক্যামেরা লাগানোর দাবি তুলেছেন তাঁরা। কিছু মেডিক্যাল কলেজ ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা দিতে যা আছে, তাছাড়া আরও পাঁচশো-সাড়ে পাঁচশো সিসি ক্যামেরা লাগানোরও দাবি জানিয়েছে। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম ও অন্য শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠকে এমন দাবি শুনে মাথায় হাত স্বাস্থ্যকর্তাদের। 

    কারণ, আর জি কর কাণ্ডের পর রাজ্য ২৪টি মেডিক্যাল কলেজের প্রতিটিতে বাড়তি সিসি ক্যামেরা কেনার জন্য ৫ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করেছিল। তাতে চাহিদার সিন্ধুর বিন্দুপূরণও হবে না। তাতে হাসপাতাল পিছু বড়জোর ২০-২৫টি সিসি ক্যামেরা কেনা সম্ভব। এদিকে হাসপাতালগুলি কমপক্ষে চাইছে ১৮০-২০০টি করে সিসি ক্যামেরা। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘আমরা আপাতত সারা রাজ্যের সব ক’টি মেডিক্যাল কলেজে আরও ৫ হাজার সিসি ক্যামেরা লাগাব। তারপর প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে।’

    আর জি কর কাণ্ডের পর নিরাপত্তাব্যবস্থা আঁটোসাঁটো করতে সোমবার শীর্ষ স্বাস্থ্যকর্তারা কলেজগুলির কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে আর জি কর চায় ২০০টি, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ১৮০টি, রামপুরহাট ১৭০টি, এনআরএস ৪১০টি, বাঁকুড়া সম্মিলনীর কর্তারা পাঁচশোরও বেশি এমন করে সিসি ক্যামেরা চাইতেই থাকেন। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের কর্তারা বলেন, ছাত্রছাত্রীদের হস্টেল রয়েছে ঝাড়খণ্ড লাগোয়া এলাকার চকমণ্ডলায়। ওখানে অনেকগুলি সিসি ক্যামেরা দিতেই হবে। সিসি ক্যামেরার চাহিদা উত্তরোত্তর বাড়ছে দেখে একটা সময় এক শীর্ষকর্তা বলেই ফেলেন, ‘এইসব কী হচ্ছে? মজা নাকি? এমন চলতে থাকলে তো প্রত্যেকেরই জন্য এক-একটা করে সিসি ক্যামেরা দিতে হবে!’ 

    সূত্রের খবর, সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রতিটি কলেজের সব সেমিনার রুমেই বসবে সিসি ক্যামেরা। সিসি ক্যামেরা ছাড়াও কোথায় কত নিরাপত্তারক্ষী দরকার, তা নিয়েও সেদিন আলোচনা হয়েছে। আরও প্রায় দেড় হাজার নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করতে চলেছে রাজ্য।  স্বাস্থ্যদপ্তরের এই উদ্যোগ নিয়ে কী বলছেন আন্দোলনকারীরা? 

    আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ডাঃ অনিকেত মাহাত বলেন,‘আরও সিসি ক্যামেরা বসানো ভালো পদক্ষেপ। স্বাগত জানাই। কিন্তু আমাদের দাবি তো মিটল না। আমাদের সহকর্মীর খুন-ধর্ষণের ঘটনায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত প্রত্যেকের শাস্তি চাই। সেই দাবি না মিটলে কোনও দাবিই মিটবে না।’
  • Link to this news (বর্তমান)