নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: সকাল থেকেই থিকথিকে ভিড়। টিকিট কাউন্টার থেকে আউটডোরের বিভাগ। কোনও জায়গাতেই তিল ধারণের জায়গা নেই। বসা তো দূরের কথা, ভালো করে দাঁড়ানোরই জায়গা নেই! কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের আউটডোরের এই চেনা ভিড় উধাও। এখন রোগী আসছেন তিন ভাগের এক ভাগ! আন্দোলন শুরুর দিকে আউটডোর পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছিল। কিন্তু, গত কয়েকদিন ধরে আউটডোর পরিষেবা অনেকটাই স্বাভাবিক। বসছেন চিকিৎসকরা। সকলেই ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন। রোগী তাতে খুশি। বললেন, আন্দোলন চলুক। তবে পরিষেবা ব্যাহত না হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে এসেই বেশিরভাগ রোগী টিকিট কাউন্টার থেকে আউটডোরের টিকিট কাটেন। তবে, বহু রোগী অনলাইনেও টিকিট কেটে আউটডোরে আসেন। সব মিলিয়ে আগে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গড়ে ৫ হাজার রোগী আউটডোরে (ওপিডি) আসেন। তার মধ্যে ৩-৪ হাজার হাসপাতালের টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কাটেন। বুধবার এই হাসপাতালের ওপিডিতে ১৮২৯ জন নতুন রোগী এসেছিলেন। তার মধ্যে হাজার খানেক হাসপাতালে এসে টিকিট কেটেছেন। বাকিরা কেটেছেন অনলাইনে। ওই ১৮২৯ জন ছাড়াও এদিন পুরনো টিকিটে ওপিডিতে এসেছেন ৬৮০ জন।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ৩ নম্বর গেটে ঢুকেই ডানদিকে আউটডোরের টিকিট কাউন্টার। আন্দোলনের আগে সকালের দিকে এই টিকিট কাউন্টারের সামনে দাঁড়ানোর জায়গা পেতেন না রোগীরা। এদিন সেই জায়গা ছিল বেশ ফাঁকা। আউটডোরের বিভিন্ন বিভাগের সামনে রোগীদের মাঝারি ভিড় দেখা যায়। হাসপাতালের এক কর্মী বললেন, আউটডোর খোলা। এখন কোনও সমস্যা নেই। তাও অনেকে ভাবছেন, সমস্যা আছে, তাই আসছেন না। যাঁদের বেশি সমস্যা, কেবলমাত্র তাঁরাই আসছেন। বাকিরা আসছেন না। তাই ভিড় কম। তবে, প্রতিদিনই একটু একটু করে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
আউটডোরে কান দেখাতে এসেছিলেন অশোক পাইক। বেশিক্ষণ দাঁড়াতে হয়নি। চিকিৎসক দেখাতে পেরেছেন। তিনি বলেন, আমার কানে সমস্যা। আগেও দেখিয়ে গিয়েছি। সকাল থেকে এসে দুপুরের পর দেখাতে পারতাম। এদিন তাড়াতাড়ি হয়ে গেল। তিনি বলেন, আর জি কর কাণ্ডে প্রতিবাদ-আন্দোলন হোক। তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আমরাও তো চাই দোষীদের শাস্তি হোক। কিন্তু, হাসপাতালের পরিষেবাটা স্বাভাবিক থাকুক। তা নাহলে আমাদের মতো গরিবরা যাবে কোথায়? এই হাসপাতালই তো আমাদের ভরসা।