কয়েকমাস ধরে আন্দোলনের চাপে পড়ে অবশেষে পদত্যাগ করলেন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত কয়েক মাস ধরেই তাঁর বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন করছিলেন পড়ুয়ারা। এমনকী কিছুদিন আগে উপাচার্যকে লক্ষ্য করে আরজি করের মতো পরিস্থিতি বানিয়ে দেওয়া হবে বলে স্লোগান তুলে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল পড়ুয়াদের একাংশ। অবশেষে পিছু হটতে বাধ্য হলেন উপাচার্য। বুধবার তিনি ই মেলের মাধ্যমে রাজ্যপাল তথা আচার্যের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। ইতিমধ্যেই সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাজ্যপাল।
দেবাশিস বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একধিক দুর্নীতির অভিযোগ ছিল পড়ুয়াদের। তাদের অভিযোগ ছিল, ভর্তির নামে অথবা ফর্ম ফিলাপের নামে পড়ুয়াদের কাছ থেকে মোটা টাকা নেওয়া হচ্ছে। অথচ সেই টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে খরচ না করে আইনজীবীর পিছনে খরচ করছেন উপাচার্য। এভাবেই লক্ষ লক্ষ টাকা নয় ছয় করেছেন তিনি। এ নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি করা হয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে। আন্দোলন চলাকালীন উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে দেখা যায়নি। এই অভিযোগ কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে দফায় দফায় অবস্থান বিক্ষোভ, মিছিল করে আসছিল পড়ুয়ারা।
পড়ুয়াদের অভিযোগ ছিল, ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি বাবদ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছিল। প্রতিবছর অন্যায় ভাবে ছাত্র ছাত্রীদের সেমিষ্টার ফি বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এমনকী পিএইচডির আবেদনের ক্ষেত্রেও আগে টাকা নেওয়া হতো না। এখন ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে ১০০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। অথচ সেই টাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরিকাঠামো ও উন্নয়ন খাতে খরচ করছে না। তাহলে সেই টাকা কোথায় যাচ্ছে? তাই নিয়ে প্রশ্ন তোলে পড়ুয়ারা।
যদিও পড়ুয়াদের অভিযোগ ছিল, তাদের কাছ থেকে সেই টাকা নিয়ে মামলা লড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আইনজীবীদের পিছনে প্রায় ৮০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। পড়ুয়াদের অভিযোগ ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষ নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে পড়ুয়াদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে। এই দাবিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার আন্দোলন করেন পড়ুয়ারা। অবশেষে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন উপাচার্য।