• কল্যাণীর জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল : দুয়ার খুলল বহির্বিভাগের
    আনন্দবাজার | ২২ আগস্ট ২০২৪
  • টানা বারো দিন বন্ধ থাকার পর বুধবার কল্যাণীর জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বহির্বিভাগের দরজা খুলল। চিকিৎসক পড়ুয়ারা অবস্থান বিক্ষোভ ও কর্মবিরতিতে সামিল থাকলেও, সিনিয়র চিকিৎসক ও শিক্ষক চিকিৎসকেরাই এ দিন বহির্বিভাগের দায়িত্ব সামলেছেন। সূত্রের খবর, তাতে অবশ্য পরিষেবা পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি।

    আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক তরুণীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় রাজ্য জুড়ে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে বন্ধ হয়ে যায় বহির্বিভাগের দরজা। সেখানকার চিকিৎসক পড়ুয়ারা কর্মবিরতির ডাক দিয়ে বিক্ষোভ, আন্দোলনে নামেন। জেলার একমাত্র কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেও ওই একই চিত্র দেখা গিয়েছে। নিহত তরুণী এই কলেজের প্রাক্তন ছাত্রী ছিলেন। আন্দোলনের জেরে গত ১০ অগস্ট থেকে হাসপাতালে বহির্বিভাগের পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বহু রোগীকে পরিষেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হয়েছে।

    কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বহির্বিভাগে মোট ১৩টি বিভাগে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়। চিকিৎসক পড়ুয়াদের আন্দোলনের জেরে বহির্বিভাগ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলেও, সঙ্কটজনক রোগীদের জরুরি বিভাগ থেকে পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, বহির্বিভাগ বন্ধের কারণে রোগীদের সমস্যাও বেড়েছিল কয়েকগুণ। এই পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার দুপুরে কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার এবং অধ্যক্ষ হাসপাতালে সব সিনিয়র চিকিৎসক, বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষক চিকিৎসকেদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে আপাতত প্রতিটি বিভাগের সিনিয়র চিকিৎসক ও শিক্ষক চিকিৎসকেরা বহির্বিভাগের পরিষেবা দেবেন।

    বুধবার সকালে বহির্বিভাগের দরজা খুলতেই চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের দীর্ঘ লাইন লক্ষ্য করা যায়। তবে দুপুর ১২টায় বন্ধ করে দেওয়া হয় বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টার। তার পরে যে সকল রোগী এ দিন চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন, তাঁদের পরিষেবা না-পেয়ে ফিরে যেতে হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, চিকিৎসক পড়ুয়ারা যেহেতু তাঁদের অবস্থানে অনড় রয়েছেন, তাই এখনই বহির্বিভাগের পরিষেবা পুরোপুরি স্বাভাবিক করা সম্ভব হচ্ছে না।

    বিষয়টি নিয়ে কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার অতনু বিশ্বাস বলেন, ‘‘রোগীদের হয়রানি কমাতে আপাতত কিছুটা সময় কম হলেও বহির্বিভাগের পরিষেবা চালু করা হয়েছে। পুরোদমে পরিষেবা যাতে চালু করা যায়, আমরাও সেই চেষ্টা করছি।’’

    বুধবার হাসপাতালের বহির্বিবিভাগের দরজা খুললেও জরুরী বিভাগের সামনে অন্যান্য দিনের মতো আন্দোলনরত চিকিৎসা পড়ুয়ারা তাঁদের অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে গিয়েছেন। তাঁদের দাবি, যত দিন না পর্যন্ত আর জি কর কাণ্ডে প্রকৃত দোষীরা গ্রেফতার হচ্ছে, সাজা পাচ্ছে। তত দিন আমাদের এই আন্দোলন চলবে। আমরাও চাই রোগীদের পরিষেবা দিতে। তার আগে চিকিৎসার পরিবেশ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত হওয়াটা অত্যন্ত জরুরি।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)