• আচমকা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির ঘরে খসে পড়ল ফল্‌স সিলিং, গাছতলাতেই কাজ, শাপশাপান্ত বিডিওকে
    আনন্দবাজার | ২২ আগস্ট ২০২৪
  • আর ছ’টা কাজের দিনের মতোই কর্মব্যস্ত ছিল অফিস। আচমকা ছন্দপতন! পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির ঘরের দরজা খুলে এক কর্মী ঢোকামাত্র হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ফল্‌স সিলিং। বড় বিপদ ঘটতে পারত। তবে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন সভাপতি-সহ কর্মাধ্যক্ষেরা। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার ইন্দপুর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে। আবার দুর্ঘটনার আশঙ্কায় সারা দিন আর দফতরেই ঢোকেননি সভাপতি। অফিস করেছেন বাইরের গাছতলায়। কর্মীরাও গাছতলায় টেবিল-চেয়ার পেতে কাজ সেরেছেন। আর দুর্ঘটনার জন্য সমস্বরে দুষেছেন বিডিওকে। যদিও গাফিলতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ইন্দপুরের বিডিও সুমন্ত ভৌমিক।

    বাঁকুড়ার ইন্দপুর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতি এবং বিডিও অফিস একই ভবনে। পুরনো ওই ভবনে বিডিওর অফিসের অংশটি বেশ সাজানো-গোছানো। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও কর্মাধ্যক্ষদের অফিস বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। দীর্ঘ দিন সংস্কার হয়নি। বুধবার বড় দুর্ঘটনা হতে পারত বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করেন পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ কৃপাসিন্ধু পণ্ডা। তিনি বলেন, ‘‘সভাপতি এবং কর্মাধ্যক্ষদের দফতর পাশাপাশি। দুটি দফতরেই বর্ষার জল ছাদ চুঁইয়ে মেঝেয় পড়ছে। বালতি রেখে কোনও ক্রমে দফতরের কাজকর্ম সারছি আমরা।’’ তার পরেই আঙুল সোজা বিডিও-র দিকে। কৃপাসিন্ধুর কথায়, ‘‘বার বার বিষয়টি বিডিও-র নজরে এনেছি। সংস্কারের আবেদনও জানানো হয়েছে। কিন্তু বিডিও নিজের দফতর এবং আবাসনে একাধিক বার সংস্কারের কাজ করালেও এই দু’টি দফতর সারানোর ব্যপারে কোনও উদ্যোগ নেননি। তারই ফল দেখা গেল।’’

    পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শর্মিষ্ঠা বাউড়ি তো ভয়ে জড়োসড়ো। তাঁর কথায়, ‘‘সিলিং আরও একটু দেরিতে ভেঙে পড়লেই আমার প্রাণ যেতে পারত। বার বার বিডিওকে বলার পরেও তিনি দফতরের সংস্কারে উদ্যোগী হননি। তাই আমাদের গাছতলায় এসে দাঁড়াতে হল।’’ সভাপতি জানালেন, যত দিন পর্যন্ত না সংস্কারের কাজ হচ্ছে, তত দিন গাছতলায় বসেই মানুষকে পরিষেবা দিয়ে যাবেন তাঁরা।

    ইন্দপুরের বিডিও সুমন্ত অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁর দফতরের তরফে কোনও গাফিলতি হয়নি। বিডিও-র বরং দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দফতরের অবস্থা যে এতটা খারাপ, তা আমার জানা ছিল না। গতকালই (মঙ্গলবার) পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিষয়টি আমার নজরে আনেন।’’ তিনিও জানান, ভবনটি অনেক পুরনো। তাই দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছিলই। বিডিও-র কথায়, ‘‘দ্রুত ওই দফতর সংস্কার করা হবে। আপাতত সভাপতি-সহ কর্মাধ্যক্ষদের বিকল্প দফতরে বসার ব্যবস্থা করছি।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)