মা-হারা খুদেকে নৃশংস মার মাসির, আপাতত সরকারি হোমে শিশু
এই সময় | ২৩ আগস্ট ২০২৪
প্রশান্ত ঘোষ, সোনারপুর
জন্মের মাত্র তিন মাস পরেই মা মারা যান। বাবা আর খোঁজ রাখেননি সদ্যোজাত সন্তানের। ফুলের মত ফুটফুটে শিশুকন্যাটির স্থান হয় মাসির কাছে। নিঃসন্তান মাসি-মেসোকেই গত পাঁচ বছর ধরে মা-বাবা বলে জেনে এসেছে শিশুটি। সম্প্রতি সন্তানের মা হয়েছেন মাসি। তার পর থেকেই অবহেলা ও অত্যাচারের শিকার হতে শুরু করে বোনের সন্তান।পাঁচ বছরের শিশুটির শরীরে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন দেখে সম্প্রতি তার সহপাঠী শিশুরা বাড়িতে জানালে ঘটনাটি জানাজানি হয়। তার পর থেকেই সন্তান-সহ পলাতক ওই মাসি-মেসো। সোনারপুর থানার গোড়খাড়া এলাকার ঘটনা।
প্রতিবেশী ও স্কুলের অন্য অভিভাবকদের অভিযোগ, কারণে অকারণে ইদানীং বছর পাঁচেকের মেয়েটিকে বেধড়ক মারধর করা শুরু হয়। মারের চোটে শিশুটির পিঠে কালসিটে দাগ পড়ে গিয়েছে। গলায়, পায়ে, হাতে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। শিশুটির শরীরে ওই আঘাতগুলি দেখে তার সহপাঠীরা বাড়িতে মা-বাবাকে জানায়।
তার পরই অন্যান্য অভিভাবকরা বিষয়টি জানতে পেরে আক্রান্ত শিশুটির মাসি ও মেসোর কাছে যান। শিশুটি তাঁদের জানায় তার পিঠে চিরুনি দিয়ে প্রচণ্ড আঘাত করেছেন মাসি। আক্রান্ত শিশুটিকে নিয়ে পুলিশের কাছে যান স্কুলের অন্যান্য অভিভাবকরা। শিশুটিকে সোনারপুর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সোনারপুরের গোড়খাড়া এলাকার বাসিন্দা অভিযুক্ত মাসি ও মেসোর সঙ্গেই থাকত আক্রান্ত শিশুটি। জন্মের পরেই তার মা মারা যায়। বাবা তার খোঁজ না নেওয়ায় মাসির সংসারে সন্তান স্নেহেই এতদিন বড় হয়েছে সে। তাঁদেরই বাবা-মা বলে ডাকত সে।
শিশুটির মেসো পেশায় দিনমজুর। প্রাথমিক চিকিৎসার পর আপাতত শিশুটিকে একটি সরকারি হোমে রাখার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। ঘটনাটি নিয়ে থানায় অভিযোগ জানানোর পরেই গা ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত মাসি-মেসো।
তবে বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকরা সোনারপুর থানায় মৌখিকভাবে জানালেও এখনও পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। স্কুলের পক্ষ থেকেও কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।
গোড়খাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌরাঙ্গচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘ছোট বাচ্চাটাকে যে ভাবে অত্যাচার করা হয়েছে আমরা তাকে ধিক্কার জানাচ্ছি। পাড়ার ক্লাব, মহিলা সমিতি, নাগরিক কমিটি সবাই মিলে বিষয়টি দেখছে বলে স্কুল এর মধ্যে ঢোকেনি।’