আরজি করের তরুণী চিকিৎসককে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায় বারবার বয়ান বদল করছেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। শুক্রবার থেকে তাঁকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করলেও অনেক প্রশ্নের জবাব তিনি দেননি বলেই দাবি তদন্তকারীদের। যা থেকে তদন্তকারীরা মনে করছেন, কিছু তথ্য আড়াল করার চেষ্টা করছেন সন্দীপ।এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার শিয়ালদহ আদালতে তাঁর পলিগ্রাফ টেস্ট করার আর্জি জানাল সিবিআই। একই সঙ্গে ঘটনার রাতে ওই তরুণীর সঙ্গে যে ৪ জন ডিউটিতে ছিলেন এবং এই ঘটনায় ধৃত সঞ্জয় রায় ঘনিষ্ঠ এক সিভিক ভলান্টিয়ারেরও পলিগ্রাফের আবেদন করা হয়েছে এ দিন। আদালত তা মঞ্জুরও করেছে।
এ দিন দুপুরে শিয়ালদহ কোর্টে নিয়ে যাওয়া হয় সন্দীপ এবং নির্যাতিতা তরুণীর ৪ সহপাঠীকে। তবে, কবে এই পলিগ্রাফ টেস্ট হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। সিবিআই সূত্রে খবর, ঘটনার রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, সে বিষয়ে সন্দীপের পাশাপাশি নির্যাতিত তরুণীর সঙ্গে ওই রাতে যাঁরা ডিউটিতে ছিলেন, তাঁদের অনেকের সঙ্গেই কথা বলা হয়েছে।
এদের মধ্যে যেমন চিকিৎসক রয়েছেন, তেমনই আছেন হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীও। যাঁদের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীদের দাবি, এক জনের সঙ্গে অন্য জনের বয়ান মিলছে না। একই অভিযোগ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসারেরা তুলেছেন সঞ্জয়-ঘনিষ্ঠ এক সিভিক ভলান্টিয়াদের বিরুদ্ধেও। সে কারণেই তাঁরও পলিগ্রাফ টেস্টের সিদ্ধান্ত। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই পরীক্ষার মাধ্যমে কেউ মিথ্যে কথা বললে তা ধরা পড়ে যায়। যা দেখেই বোঝা যায়, অভিযুক্ত আদৌ সত্যি বলছেন কি না।
সিবিআইয়ের একটি সূত্রে জানাচ্ছে, আরজি কর হাসপাতালের যেখানে তরুণী চিকিৎসকের দেহ পাওয়া যায়, সে জায়গাটি ঘিরে রাখার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। তবে কি তৎকালীন অধক্ষ্য এ বিষয়ে কোনও নির্দেশ পুলিশকে দেননি? এ বিষয়ে বুধবারও (২১ অগস্ট) কোনও সদুত্তর মেলেনি সন্দীপের থেকে। সে জন্যই এ দিন ফের তাঁকে তলব করা হয়। সেই মতো এ দিন বেলা ১০টা ১৮ মিনিটে সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছন সন্দীপ।
এরপরেই শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। টানা সাতদিন ধরে প্রায় ৮৭ ঘণ্টা আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে জেরা করেছে সিবিআই। সারদা থেকে শুরু করে হালফিলে রেশন, পুর বা শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও কোনও ব্যক্তিকে এভাবে টানা জিজ্ঞাসাবাদের নজির নেই। কিন্তু, লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদের মুখেও সন্দীপের চেহারায় আতঙ্কের কোনও ছাপ চোখে পড়ছে না। যা ভাবাচ্ছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদেরও।