প্রার্থনা সঙ্গীতের গভীরেই দৃপ্ত প্রতিবাদ, নিহত দিদির পাশে পড়ুয়ারা
এই সময় | ২৩ আগস্ট ২০২৪
‘সঙ্কোচের বিহ্বলতা নিজেরে অপমান, সঙ্কটের কল্পনাতে হোয়ো না ম্রিয়মাণ।’ হারমোনিয়াম বাজিয়ে প্রার্থনা সঙ্গীত গাইল স্কুলের পড়ুয়ারা। তবে, এ প্রার্থনা রুটিনমাফিক নয়। এ প্রার্থনা তাঁদের এক দিদির বিরুদ্ধে হওয়া নৃশংস অপরাধের সুবিচারের দাবি নিয়ে। আরজি কর হাসপাতালে নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদ পৌঁছে গেল স্কুলের অলিন্দেও।অশোকনগর বাণীপীঠ বালিকা বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের মুখেও এখন ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস'। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে তাঁরাও একদিন কোনও না কোনও কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হবে। মেধার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন পেশায় নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করবে। তবে, আরজি করের ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি। বিচার চেয়ে এবার স্কুল প্রাঙ্গণেই অভিনব প্রতিবাদ করলেন ছাত্রীরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মৌমিতা চক্রবর্তী বলেন, ‘ছাত্রীরা যখন এই ঘটনার প্রতিবাদ করার পরিকল্পনা নিয়ে আমার কাছে এসেছিল, আমি অনুমতি দিই। গোটা পৃথিবী আরজি কর কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছে, তখন বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা কেন হত্যাকারীর যথাযথ শাস্তির দাবি চেয়ে প্রতিবাদ জানাবে না!’ স্কুলের সকল শিক্ষিকাদের উপস্থিতিতে পড়ুয়ারা স্কুল প্রাঙ্গণে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ দেখায়।
স্কুলের এক শিক্ষিকা সান্তনা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই ঘটনা শুধু চিকিৎসা ক্ষেত্রে কলঙ্ক নয়, সমস্ত কর্মক্ষেত্রেই এমন ঘটনা হয়ে চলেছে। তাই সকল মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি জানিয়েই এই প্রতিবাদ হয়েছে। যত দ্রুত এই ঘটনার সত্যতা সামনে আসুক এবং অপরাধীদের শনাক্ত করে এমন শাস্তি দেওয়া হোক, যেন সমাজের এইসব কীট বা সামাজিক ব্যাধি দূর হয় সমাজ থেকে।
স্কুলের এক পড়ুয়া শ্রেয়সী সরকার জানায়, আরজি করের ঘটনা শুনে সকলে এর একটা প্রতিবাদ জানানোর পরিকল্পনা করেছিলাম। আমরা শিক্ষিকাদের কাছে প্রস্তাব রাখি। তাঁরা আমাদের খুবই সাহায্য করেছে। আমাদের মতো অন্যান্য স্কুলেও যেন এই প্রতিবাদ হয়। আরেক পড়ুয়ার কথায়, ‘আজকে আমরা একটা ছোট গণ্ডির মধ্যে রয়েছি। পরে আমাদের কর্মক্ষেত্রে যেতে হবে। কিন্তু, সেখানে তো আমাদের নিরাপত্তা দরকার। সেটাই যদি না থাকে, তাহলে কী করে হবে?’