• পরকীয়ার টানে সম্পত্তি বেচে বিয়ে, প্রেমিকের মোহভঙ্গ, থানায় বধূ
    বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, ঘাটাল: পরকীয়া প্রেমের টানে নিজের সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে যুবকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন দাসপুর থানার গোপীগঞ্জের বাসিন্দা এক গৃহবধূ। সেই যুবককে বিয়েও করে সংসারও পেতেছিলেন। কিন্তু ছ’মাস কাটতে না কাটতেই স্বপ্নভঙ্গ! নতুন স্বামীই বধূকে ফেলে রেখে বেপাত্তা।  ফলে সর্বস্ব হারিয়ে এখানে-ওখানে দিন কাটাচ্ছেন বধূ।  এনিয়ে ওই গৃহবধূ ঘাটাল ও চন্দ্রকোণা থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। যদিও কাজের কাজ কিছু হয়নি। অভিযুক্ত যুবকের নাম চন্দ্রশেখর রায়। চন্দ্রকোণা থানার হীরাধরপুরে তার বাড়ি। চন্দ্রকোণা থানার পুলিস জানিয়েছে, বিষয়টি পুলিসের নজরে রয়েছে। কিন্তু যুবক দীর্ঘদিন বাড়িতে আসছে না। 

    ওই মহিলার বাপেরবাড়ি দাসপুরগঞ্জে। ২০০৯ সালে ঘাটালের গোপীগঞ্জের বাসিন্দা এক স্বর্ণশিল্পীর সঙ্গে বিয়ে হয়। সুখেই সংসার চলছিল। তাঁদের একটি কন্যাসন্তানও আছে। মহিলা বলেন, আমার প্রথম স্বামী ভিনরাজ্যে থাকত। কন্যাসন্তান হওয়ার কিছুদিন পর থেকে সে আমার সঙ্গে যোগাযাগ ছিন্ন করে দেয়। বাড়িতেও আসত না। আমার ও মেয়ের খোঁজও নিত না।

    গৃহবধূর শ্বশুর-শাশুড়ি খুব ভালো ছিলেন। তাঁরা বউমার কষ্টের কথা উপলব্ধি করে গোপীগঞ্জ বাজারেই তাঁকে একটি খাবারের দোকান করে দেন। জায়গাও ছিল ওই গৃহবধূর নামে। তিনিই সেই দোকান চালাতেন।  দোকান চালাতে গিয়েই চন্দ্রশেখরের সঙ্গে আলাপ হয়। চন্দ্রশেখর পাইপ কোম্পানিতে কাজ করত। গৃহবধূ বলেন, চন্দ্রশেখর আগে নিজের খুড়তুতো ভাইয়ের স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। ঘটনায় সে গ্রেপ্তারও হয়েছিল। ২০১৮ সাল নাগাদ সেই চন্দ্রশেখর প্রেমের প্রস্তাব দেয়। যেহেতু ওর একটা সমস্যা ছিল, আর আমার স্বামীও কোনও যোগাযোগ রাখেনি। তাই ওর প্রতি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ি।

    এরই মধ্যে বধূর শ্বশুর ও শাশুড়ি মারা যান। গতবছর ডিসেম্বর মাসে যুবক ওই গৃহবধূকে সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে পালিয়ে যাওয়ার পরাপর্শ দেন। গৃহবধূ বলেন, আমি কিছু না ভেবে মেয়েকে বাপেরবাড়িতে পাঠিয়ে দিই। জায়গা ও দোকান বিক্রির ছ’লক্ষ টাকা নিয়ে ওর হাত ধরে বেরিয়ে পড়ি। মেদিনীপুর শহরের ধর্মায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে দু’জনে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসারও পাতি। কিন্তু মাস ছ’য়েক যেতে না যেতেই চন্দ্রশেখর নিজমূর্তি ধারণ করে। সমস্ত টাকা শেষ করে দেয়। আমাকে একা রেখেই বেপাত্তা হয়ে যায়। ফোনও ধরেনি। প্রায় দু’মাস একা থাকার পর আমি চন্দ্রশেখরের বাড়ি যাই। সেখানে কেউই আমল দিচ্ছেন না। থানাতেও অভিযোগ করেছি। ফল কিছু মেলেনি। 

    গৃহবধূ আরও বলেন, ১৫ আগস্ট ঘাটাল থানায় গিয়ে দেখি আমার নতুন স্বামীও রয়েছে। সারারাত থানায় আটকে রেখে পরের দিন সকালে ফয়সালা না করেই স্বামীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিস আমাকেও চলে আসতে বলে। ধর্মায় আর থাকি না। হাতে টাকাও নেই। তাই আমাকে এর-ওর কাছে থাকতে হচ্ছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি চাই।
  • Link to this news (বর্তমান)