• মেশিন খারাপ, করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে বন্ধ এক্স-রে বিভাগ
    বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, করিমপুর: মেশিন খারাপ হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে রয়েছে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের এক্স-রে বিভাগ। হাসপাতালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগটি বন্ধ থাকার ফলে প্রতিদিন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগী ও তাঁদের পরিজনদের। হাসপাতালের চিকিৎসক এক্স-রে করতে বললেই ছুটতে হচ্ছে বাইরে। এর ফলে রোগীকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার ঝামেলার পাশাপাশি খরচও বেশি হচ্ছে। 

    কদিন আগেই বুকে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে করিমপুর হাসপাতালে আসেন হোগলবেড়িয়ার বৃদ্ধ জিতেন বিশ্বাস। তাঁর এক আত্মীয় বলেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দেখানোর পর বুকের এক্স-রে করার কথা জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক। কিন্তু, হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন খারাপ হওয়ায় সেখানে এক্স-রে করা যায়নি। তাই বাধ্য হয়েই শুধু এক্স-রে করানোর জন্য রোগীকে নিয়ে আমাদের বাইরে ছুটতে হল। হাসপাতালে এসেও যদি এভাবে হয়রান হতে হয়, তাহলে আর হাসপাতালে আসার মানে কী হল?

    সদ্য ওই একই সমস্যায় পড়তে হয়েছে মুরুটিয়ার বছর পঞ্চাশের জলিল মণ্ডলকে। পেশায় দিনমজুর ওই প্রৌঢ় পড়ে গিয়ে কোমরে চোট পেয়েছিলেন। হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে এক্স-রে করাতে বলেন। ওই প্রৌঢ় বলেন, আমরা গরিব মানুষ। ভালো চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে এসেছিলাম। বাইরে থেকে এক্স-রে করাতে গিয়ে অনেক বেশি টাকা খরচ হয়ে গেল। ওই টাকায় ওষুধ কিনব ভেবেছিলাম। কিন্তু, সেটা আর হল না।

    এলাকার মানুষের অভিযোগ, চিকিৎসার জন্য করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের উপর করিমপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ মানুষ নির্ভর করেন। এছাড়াও এই হাসপাতালের অবস্থানগত কারণের জন্যও পাশের জেলা মুর্শিদাবাদ থেকে বহু মানুষ চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালেই আসেন। করিমপুর-২ ব্লকের নতিডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালেও এক্স-রে করানোর ব্যবস্থা না থাকায় সেখান থেকেও বহু রোগী করিমপুর হাসপাতালে আসেন। তাঁরাও এক্স-রে-এর সুবিধা না পেয়ে ফিরে যান। গত কয়েক বছরে হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণ হলেও সেই অনুপাতে হাসপাতালের পরিকাঠামোর কোনও উন্নতি হয়নি। ফলে হাড় ভাঙার সমস্যা নিয়ে নিত্যদিন হাসপাতালে এসে হয়রান হতে হচ্ছে বহু মানুষকে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে এক্স-রে মেশিন থাকলেও টেকনিশিয়ান না থাকায় বহু সময় এই বিভাগ বন্ধ ছিল। এখন এক্স-রে মেশিন পরিচালনার জন্য একজন টেকনিশিয়ানকে বেতন দিয়ে রাখা হচ্ছে, অথচ সেই মেশিন সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের সুপার মণীষা মণ্ডল বলেন, হাসপাতালের  বহির্বিভাগেই দৈনিক গড়ে সাড়ে চারশো জন রোগী আসেন। তার মধ্যে গড়ে প্রায় কুড়ি জন আসেন হাড় সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে। সেক্ষেত্রে তাঁদের সকলকেই এক্স-রে করানোর জন্য বাইরের কোথাও পাঠাতে হচ্ছে। অনেক দিনের পুরনো মেশিন খারাপ হয়ে যাওয়ার কারণে এক্স-রে বিভাগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে রয়েছে। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি একাধিকবার জানানো হয়েছে। 

    (মেশিন খারাপ থাকায় দীর্ঘদিন বন্ধ করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের এক্সরে বিভাগ। -নিজস্ব চিত্র )
  • Link to this news (বর্তমান)