• হাসপাতালের নিরাপত্তায় জোর পুলিসের, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি নবদ্বীপ থানার
    বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: আর জি কর কাণ্ডের জেরে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করল নবদ্বীপ থানা। মহিলা পুলিস কর্মী ছাড়াও হাসপাতালের নার্স,  অন্যান্য মহিলা কর্মী, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মহিলা কর্মীদের নিয়ে এই গ্রুপটি চালু করেছে পুলিস। পাশপাশি, রাতে হাসপাতাল সহ নবদ্বীপ শহরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর এলাকায় নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন মহিলা পুলিস কর্মীরা। পুলিস-প্রশাসনের এই ভূমিকায় খুশি হাসপাতালের নার্স, মহিলা কর্মী, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

    এদিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল দুই মহিলা পুলিস কর্মী  হাসপাতালে আসা বিভিন্ন মহিলাদের সঙ্গে কথা বলছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে থানায় জানানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। এরজন্য একটি মোবাইল নম্বরও দেওয়া হচ্ছে। সকালে টহলরত ছিলেন নবদ্বীপ থানার মহিলা দুই পুলিস কর্মী রাখিলা খাতুন ও মীরা হালদার। তাঁরা বলছিলেন, ‘আমরা হাসপাতাল এবং বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছি। রাস্তার অনেক মহিলার সঙ্গে কথা বলছি। তাঁদের কোনও সমস্যা রয়েছে কিনা, জানতে চাইছি। কোথায় বাড়ি কোথা থেকে এসেছিলেন, কোনও কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন কিনা—এসব কিছু জানতে চাওয়া হয়। কাজে বেরিয়ে রাস্তাঘাটে যদি কোনও অসুবিধা হয় বা চোখের সামনে অপ্রীতিকর ঘটনা দেখেন কিংবা অন্য কোনও অপরিচিত মহিলা যদি অসুবিধায় পড়েন, তবে থানায় ফোন করে জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। 

    নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২৫ বেডের এই হাসপাতাল প্রতিদিন ১৭০ থেকে ১৮০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। এছাড়া প্রতিদিন আউটডোরে ৬০০ থেকে ৭০০ রোগী ভিড় করেন। এই হাসপাতালে তিনটি  পৃথক বিল্ডিং এবং ব্লাড ব্যাঙ্ক রয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় মোট ১৫ জন গার্ড রয়েছেন। নতুন ও পুরনো বিল্ডিং মিলিয়ে প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডাঃ অনঘ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিরাট এলাকা নিয়ে এই হাসপাতাল। শুধু সিসি ক্যামেরায় তো নজরদারি করা সম্ভব নয়। সেই কারণে আমরা মাস তিনেক আগে জেলা পুলিসের কাছে এখানে একটা পুলিস পোস্ট তৈরির জন্য আবেদন করেছিলাম। অন্ততপক্ষে রাতে এই পুলিস পোস্টিংয়ের খুবই প্রয়োজন। তবে এখনও হয়নি। জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে হাসপাতাল চত্বরে সিভিক কর্মী দেওয়া হচ্ছে না। স্থানীয় থানা থেকে মহিলা পুলিস কর্মী এবং নার্সিং স্টাফ এবং মহিলা কর্মীদের নিয়ে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ করা হয়েছে। রাতে বা দিনে কোনও ঘটনা ঘটলেই ওই হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করা হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে পুলিস কর্মীরা সেখানে চলে আসবেন। 

    নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের নার্সিং স্টাফ পায়েল কুন্ডু জানান, হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে আমাদের নার্সদের নাম নথিভুক্ত করেছেন পুলিশকর্মীরা। এখনও অনেকে বাকি রয়েছেন। আশা করি এই গ্রুপে তাঁদেরও নেওয়া হবে। এই রকম নিরাপত্তা সব সময় থাকলে ভালো হয়।  নবদ্বীপ থানার আই সি জলেশ্বর তেওয়ারি জানান, থানার হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ নিয়ে জনগণের মধ্যে একটা ভালো সাড়া পাওয়া গিয়েছে। শুধু হাসপাতাল নয়, বিভিন্ন গঙ্গার ঘাট, মন্দির চত্বর সহ বিশেষ বিশেষ স্পর্শকাতর এলাকায় পুলিস কর্মীরা নজরদারি চালাচ্ছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)