বালুরঘাটের রঘুনাথপুরে গ্রেপ্তার দুই দালাল, ডাক্তারের চেম্বারে থানার নম্বর লেখার নির্দেশ
বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৪
সংবাদদাতা, পতিরাম: দালালচক্রের বাড়বাড়ন্ত রুখতে অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার দু’জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিস। বালুরঘাটে চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বারগুলিতে দীর্ঘদিন অত্যন্ত সক্রিয় দালালচক্র। জাতীয় সড়কে বাস থেকে নামতেই দালালরা কার্যত পাকড়াও করে নিয়ে যায় রোগীদের। রঘুনাথপুরে দালালদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ চিকিৎসা করাতে আসা রোগীরা। চক্রের সদস্যদের শায়েস্তা করতে বৃহস্পতিবার ভোরে অভিযান চালায় বালুরঘাট থানার পুলিস। রঘুনাথপুর এলাকা থেকে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিসের পাশাপাশি জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর দালালদের নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে চেম্বারগুলির মালিকদের। এছাড়া ওই চত্বরে কয়েকটি ল্যাবের নির্দিষ্ট কিছু সরকারি অনুমতি নেই বলে অভিযোগ। সেগুলিতে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ও প্রশাসন ধারাবাহিক অভিযান করবে।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস বলেন,আমরা আগেই পুলিসকে জানিয়েছিলাম। আজ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রাইভেট চেম্বার এবং যে প্যাথল্যাবগুলি আমাদের কাছে ‘সি’ লাইসেন্স নিয়েছে, তাদের সতর্ক করা হচ্ছে। দালালরা যাতে এলাকায় না থাকে, তাদের দেখতে বলা হয়েছে।
পুলিস সূত্রে খবর, বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের বাইরে অর্থাৎ রঘুনাথপুর, ট্যাঙ্ক মোড় এবং হাসপাতাল মোড়ে বহু চিকিৎসকের প্রাইভেট চেম্বার এবং প্যাথলজিক্যাল ল্যাব রয়েছে। বাস, টোটোয় রোগীরা এলেই তাঁদের চেম্বারগুলিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায় দালালদের মধ্যে। চিকিৎসককে দেখানোর পর অনেক ক্ষেত্রে জোর করে সেই ল্যাবগুলিতে রোগীদের পরীক্ষা করাতে নিয়ে যায় দালালরা।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বেশিরভাগ চেম্বার ও ল্যাবগুলির সঙ্গে এই দালালদের যোগ রয়েছে। রোগীদের নিয়ে যেতে পারলেই মেলে ভালো কমিশন। ফলে ভোর হলেই রঘুনাথপুর, ট্যাঙ্ক মোড় এবং হাসপাতাল মোড়গুলিতে দালালরা পথে নেমে যায়। অনেক গ্রামের রোগীকে জোর করে নির্দিষ্ট ল্যাবে টেস্ট করাতে, ওষুধ কিনতে বাধ্য করে দালালরা। এতে মাঝেমধ্যেই হেনস্তার অভিযোগ করেন রোগীরা। দালালদের বাড়বাড়ন্তের অভিযোগ পেয়ে পুলিস ও প্রশাসন কয়েকবার সতর্ক করেছিল। কিন্তু দালালদের দাপট কিছুতেই কমেনি। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিস দু’জনকে গ্রেপ্তার করতেই বাকিরা এলাকা থেকে চম্পট দেয়। এদিন পুলিস একাধিক নির্দেশ দিয়েছে। রোগীদের জোর করে চেম্বারে নিয়ে গেলে প্রয়োজনে রোগীরা যাতে পুলিসকে ফোন করতে পারেন সেজন্য চেম্বারগুলিতে থানার মোবাইল নম্বর লেখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই এলাকাগুলিতে পুলিস মোতায়েন করা হচ্ছে।
আইসি শান্তিনাথ পাঁজা বলেন, রোগীদের জোর করে কেউ নিয়ে যেতে পারে না। আমরা দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছি। চেম্বারগুলিতে থানার ফোন নম্বর লাগাতে বলছি। রোগীরা সমস্যায় পড়লেই ফোন করবেন। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।