• পুলিসকে ভর্ৎসনা, হাজিরার নির্দেশ পদস্থ অফিসারকে
    বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: পুলিসের জমা দেওয়া স্টেটাস রিপোর্টের তথ্য এবং মৌখিক দাবি মিলছে না। তার জেরেই তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে প্রবল ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিবালকে। একের পর এক প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে হল তাঁকে। এমনকী শেষপর্যন্ত পরবর্তী শুনানিতে রাজ্য পুলিসের দায়িত্ববান কোনও অফিসারকে সশরীরে শীর্ষ আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি। সেই সঙ্গে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। 

    এদিন আর জি কর কাণ্ডে তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিয়েছে সিবিআই। তা দেখেও এদিন কোনও মন্তব্য করেনি প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চ। গত ১৪ আগস্ট থেকে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তার আগেই, ঘটনার পরদিন সন্দেহভাজন হিসেবে সঞ্জয় রায় নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করে ফেলেছিল কলকাতা পুলিস। সিবিআইয়ের জালে এখনও পর্যন্ত নতুন কেউ ধরা পড়েনি। ধর্ষণ-খুনের কিনারায় কতদিন লাগবে? উঠছে সেই প্রশ্ন। এই প্রেক্ষিতেই এদিন শুনানিতে সিবিআই তথা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার মন্তব্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। সিবিআইয়ের স্টেটাস রিপোর্ট যখন নীরবে পড়তে শুরু করেছেন তিন বিচারপতি, তখনই তিনি বলেন, ‘আমরা তদন্তভার পেয়েছি পাঁচদিন পর। ততদিনে অনেক কিছু বদলে গিয়েছে। ক্রাইম সিন নিয়ে কলকাতা পুলিস কী করেছে, জানি না।’ যদিও সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করে ওঠেন সিবাল। বলেন, ‘সবই ভিডিওগ্রাফ করা আছে। ক্রাইম সিনের কিছুই বদল করা হয়নি। পুলিস তদন্তের যাবতীয় কেস ডায়েরি সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে। সেখানে ঘটনা পরবর্তী পুরো টাইমলাইন দেওয়া আছে।’

    যদিও সেই টাইমলাইন উল্লেখ করেই এদিন রাজ্যকে চেপে ধরেন বিচারপতি পার্দিওয়ালা। তাঁর সওয়াল, সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ মেয়েটির মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর মিলল। সকাল ১০ টা ১০ মিনিটে টালা পুলিস স্টেশনে জেনারেল ডায়েরি এন্ট্রি (জিডিই) করা হল। আর অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের হল রাত সাড়ে ১১ টায়। তার ১৫ মিনিট পরেই পৌনে ১২টায় এফআইআর? প্রায় ১৪ ঘণ্টা পরে এফআইআর! এটার কোনও যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রশাসন যেভাবে এই মামলা পরিচালনা করেছে, আমার ৩০ বছরের আইনি কেরিয়ারে এমন দেখিনি।

    বিচারপতি পার্দিওয়ালার আরও প্রশ্ন, ময়নাতদন্ত হয়েছে সন্ধ্যা ৬-১০ থেকে ৭-১০ পর্যন্ত। যখন জেনেই গিয়েছেন মৃত্যুর কারণ, তখন অস্বাভাবিক মৃত্যু কেন বলা হল? হাসপাতালের সহকারী সুপারিনটেন্ডেন্টের ভূমিকাও খুব সন্দেহজনক। কলেজের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষই বা কেন এফআইআর করলেন না? কাকে বাঁচাতে চাইছেন তিনি? কেন তাঁকে বদলি করে অন্য হাসপাতালে পাঠানো হল? পরের পর প্রশ্নবাণে যথাযথ জবাব দিতে পারেননি সিবাল।
  • Link to this news (বর্তমান)