• লাই ডিটেক্টর টেস্ট সন্দীপ সহ ৬ জনের, ৪ জুনিয়র ডাক্তার ও সন্দেহভাজন দ্বিতীয় সিভিক তালিকায়
    বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের তদন্তে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ, চার জুনিয়র ডাক্তার এবং দ্বিতীয় সন্দেহভাজান সিভিক ভলান্টিয়ারকে বসতে হচ্ছে পলিগ্রাফ টেস্টে। ঘটনার পর দফায় দফায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও বেশ কিছু জায়গায় এজেন্সির খটকা থেকে গিয়েছে। সেই কারণেই লাই ডিটেক্টর পরীক্ষা। সম্মতির জন্য শিয়ালদহ আদালতে সকলকেই বৃহস্পতিবার হাজির করানো হয়। তাঁরা প্রত্যেকেই পলিগ্রাফে রাজি হয়েছেন বলে সূত্রের খবর। আজ, শুক্রবার এই পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে।

    ওই তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে যে জুনিয়র ডাক্তাররা রাতের খাবার খেয়েছিলেন, তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল সিজিও কমপ্লেক্সে। তদন্তকারীরা জানতে চান, কোথা থেকে খাবার এসেছিল। সকলেই জানান, অন লাইনে অর্ডার করা হয়েছিল। প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা করে খাবার রিসিভ করেন। তরুণী চিকিৎসকও নিজেই খাবার ডেডিভারি নিয়েছিলেন। কিন্তু তদন্তকারীদের প্রশ্ন, সত্যিই কি তরুণী খাবার নিয়েছিলেন? নাকি অন্য কেউ রিসিভ করেছিল? ওই সময় খাবারে কিছু স্প্রে করা হয়নি তো? ডিনারের অল্প সময়ের মধ্যে ওই তরুণী এত গভীর ঘুমে গেলেন কীভাবে? এই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে সিবিআইকে। শুধুই ক্লান্তি থেকে এই ঘুম সম্ভব? কেমিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্ট এলে তা জানা যাবে। এজেন্সি জেনেছে, খাওয়ার পর সকলেই সেমিনার হল ছেড়ে বেরিয়ে যান। এজেন্সির কাছে জুনিয়র ডাক্তাররা প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, দিদি একাই বিশ্রাম করছিলেন। তিনি বলেছিলেন, টানা ৩৬ ঘণ্টা ডিউটি করার পর তিনি ক্লান্ত। এই উত্তরে অবশ্য সন্তুষ্ট নয় সিবিআই। অফিসাররা জানতে চান, কেউ একা থাকতে চাইলে কি অন্য দিনও বাকিরা বিশ্রাম না নিয়ে তাঁকে এভাবে একা ঘর ছেড়ে দেন? সকলেই একবাক্যে জানান, এটাই হয়ে থাকে। ডাক্তারদের জন্য আলাদা রুম থাকার পরেও সেমিনার হলে মহিলা চিকিৎসকরা কেন বিশ্রাম নেন? সিবিআইয়ের এই প্রশ্নে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি ছিল, তাঁরা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দু’জায়গাতেই ঘুমাতে যান। সেদিন অবশ্য ‘দিদি’কেই গোটা ঘর ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তাতে ধন্দ বাড়ছে অফিসারদের। এমনকী, রাত দুটোয় এক চিকিৎসক ‘দিদি’র কাছে কনসাল্ট করে যান বলে দাবি করেছেন, তিনি আদৌ এসেছিলেন? নাকি অন্য কিছু দেখে ফিরে যান? এই প্রশ্নও তুলছে সিবিআই। একই প্রশ্ন থাকছে রাত তিনটে নাগাদ রিপোর্ট দেখাতে আসা এক জুনিয়র ডাক্তারের বয়ানে। সিবিআই প্রশ্ন তুলছে, তরুণীকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখেই কি ফিরে যান তিনি? ততক্ষণে তরুণীর মৃত্যু হয়নি তো? সিসি ক্যামেরা না থাকায় এর উত্তর মিলছে না। পাশাপাশি সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ সিবিআইকে জানিয়েছেন, মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর যা যা করা দরকার, তিনি সবই করেছিলেন। এতকিছুর পরও সন্তুষ্ট হতে পারেনি সিবিআই। তাই পলিগ্রাফ টেস্টের আবেদন। একইসঙ্গে তালিকায় দ্বিতীয় সিভিককে রাখার কারণ কী? অফিসাররা দেখে নিতে চাইছেন, তিনি সবটা সত্যি বলছেন কি না। কারণ, মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় শেষ রাতে আর জি করে পৌঁছনো পর্যন্ত যাবতীয় সূত্র রয়েছে তাঁরই কাছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)