পরিষেবা বন্ধ বলে বেসরকারি হাসপাতালে ছুটছে অ্যাম্বুলেন্স
বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, সংবাদদাতা বারুইপুর ও কাকদ্বীপ: জেলা হাসপাতালগুলিতে ক্রমে ছন্দে ফিরছে আউটডোর। ইমারজেন্সিও সচল। কিন্তু এবার শুরু হয়েছে নয়া উপদ্রব। দক্ষিণ ২৪ পরগনাজুড়ে লাগাতার অভিযোগ উঠছে, রোগীর পরিজনদের ভুল বুঝিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে চলে যাচ্ছেন বহু অ্যাম্বুলেন্স চালক।
ডায়মন্ডহারবার হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে আন্দোলন শুরুর দিকে আউটডোর বন্ধ ছিল। তারপর খুলেছে। কিন্তু এখনও দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষকে বিভ্রান্ত করে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে চলে যাচ্ছেন অ্যাম্বুলেন্স চালকদের একাংশ। ডায়মন্ডহারবার হাসপাতালে এসেছিলেন রমেশ নাইয়া নামে ঢোলাহাটের এক ব্যক্তি। তাঁর পরিবারের সদস্যরা বলেন, গত সপ্তাহে পরিষেবা বন্ধ ছিল। ডাক্তার বসছেন কি না জানতাম না। আমার ভাইয়ের দুর্ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালে ভর্তি করার দরকার ছিল। স্থানীয় একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেছিলাম। চালক বললেন, সরকারি হাসপাতালে এখন পরিষেবা বন্ধ। তাই নার্সিংহোমে নিয়ে গেলেন। সেখানে যেতে হল। তবে চিকিৎসা শুরুর পর অনেক টাকার বিল হয়ে যায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ডায়মন্ডহারবার হাসপাতালে সব খোলা। তাই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ছুটি করিয়ে এখানে নিয়ে এসে ভর্তি করালাম।’ এরকম ঘটনা একটি নয়। প্রতিদিন এরকম ভুল বোঝানোর খেলা হচ্ছে বলে হাসপাতাল সূত্রেও জানা গিয়েছে। এখন গ্রামে গ্রামে চালকদের একাংশ যাচ্ছেন আর বলছেন, সরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতি চলছে। পরিষেবা চালু হয়নি। যেতে হলে নার্সিহোমে যেতে হবে। তাই বেসরকারি নার্সিংহোমগুলিতে হু হু করে ভিড় বাড়ছে। চালকদের অবশ্য বক্তব্য, রোগীর পরিবার যেমন বলছে, আমরা তেমন করছি। আবার কখনও চালকদের অতি সক্রিয়তাও দেখা গিয়েছে। হাতের আঙুল তো সব সমান হয় না। কয়েকজনের জন্য সবার বদনাম হচ্ছে।
অন্যদিকে এই ডামাডোলের মধ্যেও রোগী ভর্তি, অস্ত্রোপচার বিঘ্নিত হয়নি। ডায়মন্ডহারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রোগীর চাপ এখন কম। কিন্তু চিকিৎসারতদের পরিষেবা নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। ১২ থেকে ১৯শে আগস্ট পর্যন্ত এই হাসপাতালে ১৯৫টি প্রসব হয়েছে। তবে ছ’শো শয্যার অর্ধেক এখনও খালি। পাশাপাশি বারুইপুর হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে গত এক সপ্তাহে ৪০ জন রোগীর অস্ত্রোপচার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালেও দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়েছে রোগীদের। কিন্তু ডাক্তার দেখাতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।