• দ্রুত বিচার ও দোষীর কঠোর সাজা চান মমতা, অভিষেক
    বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ধর্ষণ প্রতিরোধে কঠোরতম আইন আনার পক্ষে জোর সওয়াল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী আবেদন করেছেন, ফাস্ট ট্র্যাক স্পেশাল কোর্টের মাধ্যমে ১৫ দিনের মধ্যে দ্রুত বিচার সুনিশ্চিত করতে হবে।  প্রায় একসুর সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। মমতা ও অভিষেক দু’জনই মত প্রকাশ করেছেন, দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে দোষীর সাজা হোক। কিন্তু আর জি করের ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই যে ধীর গতিতে বিচার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে আম জনতারই মুখে। কলকাতা পুলিসের থেকে সিবিআইয়ের হাতে আর জি করের তদন্তভার গেলেও সিবিআই এই ক’দিনে কী করেছে, তা নিয়ে কৌতূহল সাধারণ মানুষের। রাজ্যবাসীর এই স্বরকে পাথেয় করেই তৃণমূল বলছে, কলকাতা পুলিস ৯০ শতাংশ তদন্তের কাজ শেষ করে ফেলেছিল। কিন্তু তারপর থেকে যথেষ্ট সময় পেয়েও সিবিআইয়ের ভূমিকা আশাব্যাঞ্জক নয়।

    বস্তুত, আর জি করের ঘটনায় সিবিআই তদন্তভারে হাতে নেওয়ার পর ১০ দিন পার করে ফেলেছে। তারা কীভাবে তদন্ত প্রক্রিয়া চালাচ্ছে, কী কী তথ্য পেয়েছে, ঘটনায় সঞ্জয় রায় ছাড়াও আর কেউ আদৌ ছিল কি না, অনেক প্রশ্ন রয়েছে। এমনকী সন্দীপ ঘোষকে টানা ছ’দিন জিজ্ঞাসাবাদ করেও সিবিআই কী পেয়েছে, কেনই-বা তাঁকে প্রতিদিন ডেকে পাঠানো হচ্ছে, এনিয়েও অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। বাস, ট্রেন, চায়ের দোকান সর্বত্র আলোচনা সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে। এই প্রেক্ষাপটেই বৃহস্পতিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি জানিয়েছেন, ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইন আনতে হবে। যেখানে ৫০ দিনের মধ্যে দোষীকে চিহ্নিত করে, দোষী সাব্যস্ত করে কঠোরতম সাজার নিদান থাকবে। 

    এর আগে ‘এনকাউন্টার’-এর কথা উঠে এসেছিল অভিষেকের বক্তব্যে। তাঁর মত হল, এমন দৃষ্টান্তমূলক সাজা থাকবে, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ করতে কেউ সাহস না পায়। সেই সূত্রে এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ মহলে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় তুলে ধরে মত প্রকাশ করেছেন। তিনি প্রশাসনের অংশ নন, তবে জনপ্রতিনিধি হওয়ার সুবাদে সামাজিক ক্ষেত্রে কোন কোন পদক্ষেপ প্রয়োজন, তা তুলে ধরেছেন। অভিষেক ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতির ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ের পুনর্গঠন প্রয়োজন। শুধু বাংলা নয়, দেশের অন্যান্য রাজ্যের কাছেও তা জরুরি। তাই ধর্ষণ প্রতিরোধে কড়া আইন আনতে হবে। প্রশাসনিক সিস্টেমে একটি বদল প্রয়োজন। কেন্দ্রের উপর বাংলা সহ সব রাজ্যকে চাপ বাড়াতে হবে। আর জি করের ঘটনায় সিবিআইয়ের উপর চাপ বাড়িয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেছেন, এখনও পর্যন্ত সিবিআই একজনকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি! মাত্র একজনই গ্রেপ্তার হয়েছে, তাও করেছে কলকাতা পুলিস। তাহলে সিবিআইয়ের হাতে ক্ষমতা গিয়ে লাভটা কী হল? সিবিআই যথেষ্ট সময় পেয়েছে। কোনও সুরাহা করতে পারেনি। অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে তাদের তদন্ত। অন্যদিকে, সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণকে এদিন স্বাগত জানিয়েছে তৃণমূল। দলের বক্তব্য, ধর্ষণ-খুন নিয়ে রাজনীতি করা যাবে না, এটা সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। তাই এই বিষয়টি বিরোধীরাও যেন খেয়াল রাখেন। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)