• কাঁকুরগাছিতে পুড়ে খাক প্লাস্টিক-লোহার তিন গুদাম, নেভাতে বেগ পেল দমকলের ২০ ইঞ্জিন
    বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড শহরে। বুধবার গভীর রাতের আগুনে পুড়ে খাক হয়ে গেল কাঁকুরগাছির লোহাপট্টির তিনটি গুদাম। অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত আগুনের সঙ্গে লড়াই করেন দমকল কর্মীরা। দমকলের ২০টি ইঞ্জিন প্রায় পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আনলেও কুলিং প্রসেস চালাতে বেলা গড়িয়ে যায়। তবে এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর মেলেনি।

    দমকল ও পুলিস জানিয়েছে, বুধবার রাত দেড়টা নাগাদ আগুন লাগে একটি স্ক্র্যাপ লোহার গুদামে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, একটি প্লাস্টিকের গুদাম থেকেই আগুন ছড়িয়েছে। দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় নিমেষের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা অভিষেক লোহার বলেন, রাত দেড়টা নাগাদ লোহাপট্টির একটি প্লাস্টিকের গুদাম থেকে আগুনের শিখা বেরতে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় দমকলে। পাশের গুদামে যে কর্মীরা ছিলেন, তাঁদের উদ্ধার করে আনেন স্থানীয়রাই। আগুনের শিখা তিন-চারতলা বাড়ির সমান উঠে যায়।

    প্রথম দফায় অকুস্থলে আসে দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন। পরে আরও পাঁচটি ইঞ্জিন এবং শেষে আরও ১০টি ইঞ্জিন আসে। বিস্তীর্ণ এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ায় এবং এলাকাটি ঘিঞ্জি হওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয় দমকল কর্মীদের। সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ আগুন অনেকটাই আয়ত্তে আসে। তবে বিক্ষিপ্তভাবে কোথাও কোথাও পকেট ফায়ার ছিল। পকেট ফায়ায় নিয়ন্ত্রণে আনার পর জায়গাটি কুলিং করতে বেলা হয়ে যায়। 

    স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে খবর, প্রথমে একটি প্লাস্টিকের কারখানায় আগুন লাগে। সেই আগুন আশপাশের আরও দু’টি কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে লোহার স্ক্র্যাপ ও কাঠের গুদাম ছিল। ওই গুদামগুলিতে কোনও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না বলেই জানা গিয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আগুন লাগার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। দমকল সূত্রে খবর, ঘটনাস্থলে তামার তার মিলেছে। সেগুলি সম্ভবত পোড়ানো হচ্ছিল। সেখান থেকেই কোনওভাবে আগুন লাগতে পারে।

    স্ক্র্যাপ লোহার গুদামে কয়েকজন কর্মচারী আটকে থাকলেও প্রত্যেককে নিরাপদে বের করে আনা হয়। ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার শান্তিরঞ্জন কুণ্ডু বলেন, ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। তবে, কোনও প্রাণহানি ঘটেনি সেটাই রক্ষে। এইসব গুদাম নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের নানা অভিযোগ রয়েছে। দমকলকে বলেছি, ওয়ার্ডে এমন যত গুদাম ও কারখানা রয়েছে, সেগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখা হোক। 

    দীর্ঘদিন ধরে বেআইনিভাবে এই কারখানাগুলি চলছিল বলে অভিযোগ। দমকল এগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)