এই সময়: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে বৃহস্পতিবার আরজি কর হাসপাতালে মোতায়েন হলো সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স বা সিআইএসএফ। আপাতত পুলিশকে সহায়তা করবেন বাহিনীর জওয়ানরা। আগামী সাত দিন তাঁরা হাসপাতালের ‘ডিউটি-প্যাটার্ন’ পর্যবেক্ষণ করবেন। কারণ এ ধরনের ডিউটির অভিজ্ঞতা এই বাহিনীর নেই।প্রাথমিক ভাবে মোট ১৮৫ জন সিআইএসএফ জওয়ানকে হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় তিনটি শিফটে মোতায়েন করা হচ্ছে। এই দলে প্রায় কুড়ি জন মহিলা জওয়ানও রয়েছেন। মহিলা হস্টেল এবং ওপিডি-তে তাঁদের মোতায়েন করা হবে। মহিলারা যেখানে নাইট ডিউটি করবেন, সেখানেও তাঁরা থাকবেন। যদিও আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, এই ব্যবস্থা সাময়িক। এতে নিরাপত্তা-সমস্যার পাকাপাকি সমাধান হবে না।
১২ একর জমিতে বিভিন্ন মাপের ৩৩টি বিল্ডিং নিয়ে তৈরি আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সবক’টি ডিপার্টমেন্ট ও হস্টেলে সিআইএসএফ থাকছে। এ ছাড়াও হাসপাতালের তিনটি মূল গেটেও মোতায়েন থাকছেন বাহিনীর জওয়ানরা। গেট ৬, ওপিডি গেটে এই বাহিনী থাকবে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। জরুরি বিভাগের দুই গেটে বাহিনী থাকবে ২৪ ঘণ্টাই।
এ ছাড়া ইমার্জেন্সি বিল্ডিং, ট্রমা কেয়ার, ওপিডি, প্রশাসনিক ভবনে থাকছে মেটাল ডিটেক্টরও। সাতটি ছাত্রীনিবাস এবং দু’টি ছাত্রনিবাস ও নার্সিং হস্টেলেও বাহিনী রাখা হয়েছে। তিন শিফটে কাজ করবে ক্যুইক রেসপন্স টিম। ওপিডি-ইমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ে প্রতি শিফটে ছ’জন জওয়ান থাকবেন। অক্সিজেন প্লান্ট, রেডিও অ্যাক্টিভ সরঞ্জাম থাকা ঘরও চলে গিয়েছে বাহিনীর নজরদারিতে।
হাসপাতালের বাউন্ডারি ওয়ালের সংস্কারেও নজর থাকবে সিআইএসএফ-এর। বাহিনী পরিচালনায় খোলা হচ্ছে কন্ট্রোল রুম। হাসপাতালের গেস্ট হাউসে সর্বক্ষণের জন্য এসিপি পদমর্যাদার দুই আধিকারিক থাকছেন। হাসপাতালের কেওপিটি ভবনে জওয়ানদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
যদিও এই নিরাপত্তায় সন্তুষ্ট নন আন্দোলনরত চিকিৎসকরা। তাঁদের যুক্তি, এটা পাকাপাকি ব্যবস্থা নয়। দু’-তিন মাস পরে বাহিনী ফিরে গেলে ফের সেই কলকাতা পুলিশ একক ভাবে দায়িত্বে থাকবে। তা হলে তাঁরা কী চাইছেন? এক চিকিৎসক বলেন, ‘নিরাপত্তার সব ফাঁকফোকর সংশোধন করা হোক। রোগীদের সঙ্গে যাতে প্রচুর মানুষ ইমার্জেন্সি বা ওপিডি-তে ঢুকে না পড়েন, তা নিশ্চিত করতে হবে। যাঁরা হাসপাতালে ঢুকছেন, তাঁদের পরিচয় যাচাই করা জরুরি। এগুলো না করে শুধু বাহিনী দিয়ে সাময়িক সমাধান হবে, সংস্কার নয়।’
কোথায়, কী ভাবে জওয়ানদের মোতায়েন করা হবে, তা ঠিক করতে এ দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন সিআইএসএফ-এর ডিআইজি কুমারপ্রতাপ সিং৷ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা কৌস্তভ নায়েক, হাসপাতালের নতুন অধ্যক্ষ মানস বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্য কর্তারা৷