• কমেছে ডেঙ্গুর প্রকোপ, সচেতন হচ্ছে কলকাতা!
    বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: চলতি বছর এখনও পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গুর প্রকোপ সেভাবে দেখা যায়নি। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগের দাবি, চলতি বছরের শুরু থেকেই ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া হয়েছে। লাগাতার নোটিস ধরানো হয়েছে নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের। কিছুটা হলেও টনক নড়েছে মানুষের। এর ফলশ্রুতিতেই গত বছর এই সময়ের তুলনায় এবার এখনও পর্যন্ত শহরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জঞ্জাল, জমা জল ইত্যাদি সমস্যা দূর করতে চলতি বছরে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার নোটিস ইস্যু করেছে পুরসভা। এর মধ্যে সাড়ে ন’হাজার জায়গা তড়িঘড়ি সাফ করা হয়েছে। এসব কারণে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা গতবার এই সময়ের তুলনায় ৭০ শতাংশ (৭০.০৬) কম। গত বছর ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত শহরের ৯৯১ জন নাগরিক ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন। চলতি বছর সংখ্যাটা ২৯১। 

    পুরসভার নিয়ম অনুযায়ী, শহরে কোনও বাড়ির চত্বরে বা ফাঁকা জমিতে আগাছার জঙ্গল, আবর্জনার স্তূপ ইত্যাদি তৈরি হলে সংশ্লিষ্ট মালিকপক্ষকে ভেক্টর কন্ট্রোল আইনে নোটিস ধরায় পুরসভা। জায়গাটি পরিষ্কার করার জন্য সাত থেকে দশদিন সময় দেওয়া হয়। তারপরও মালিকপক্ষ সাফাই না করলে পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ সেই এলাকা সাফ করে দেয়। খরচ বাবদ অর্থ ওই জমি বা বাড়ির সম্পত্তি করের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জমি বা বাড়ির মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে মিউনিসিপাল কোর্টে মামলা রুজু করা হয়। এই মামলায় ১০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানার সংস্থান রয়েছে। এই নিয়ম যে কোনও বেসরকারি বা স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ইতিপূর্বে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধেও মামলা করেছে পুরসভা। ভেক্টর কন্ট্রোল আইনের ক্ষমতা বলে পুরসভা রেল, বন্দর, এমনকী সেনার আওতাধীন জমিতেও নোটিস দিতে পারে। 

    কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, চলতি বছর প্রথম থেকেই শহরের বিভিন্ন অংশে লাগাতার অভিযান এবং নোটিস ধরানোয় একটা চাপ তৈরি হয়েছে। জরিমানার ভয় ঢুকেছে নাগরিকদের একাংশের মধ্যে। গত বছর যেখানে ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ৭১০০টি নোটিস ইস্যু করা হয়েছিল, সেখানে এ বছর প্রায় সাড়ে ১০ হাজার নোটিস দেওয়া হয়েছে। মামলা করা হয়েছে অন্তত ১০টি ক্ষেত্রে। পুরসভার  মুখ্য পতঙ্গবিদ ডঃ দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, ‘আর জি কর, এসএসকেএম ও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মতো হাসপাতালগুলি এবার ভালো কাজ করেছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েও ভোগান্তি হয়নি।’ 

    পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর থেকে এখনও পর্যন্ত ভেক্টর কন্ট্রোল আইনে প্রায় ১৫০টি মামলার শুনানি চলছে। সেগুলির শীঘ্রই নিষ্পত্তি হবে এবং মোটা টাকা জরিমানা হবে। তবে কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এখনই আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। অন্তত ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত সতর্ক থাকতেই হবে। কোনও গাফিলতি করা যাবে না। পুরসভার বিল্ডিং, জঞ্জাল সাফাই ও নিকাশি বিভাগকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)