ইসিএলের ঝাঁঝরা এরিয়ার ‘কর্পোরেট ওয়েলফেয়ার বোর্ড’-এর বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার আক্রান্ত হলেন পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি বিষ্ণুদেও নুনিয়া। তাঁর গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়, চালককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। কোনওমতে গাড়ি ঘুরিয়ে তিনি ফিরে আসেন বলে দাবি করেন বিষ্ণুদেও। আইএনটিটিইউসি প্রভাবিত কয়লা খাদান শ্রমিক কংগ্রেস (কেকেএসসি) হামলা চালায় বলে অভিযোগ তাঁর। অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে কেকেএসসি।
শ্রমিক-কল্যাণে নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের পর্যালোচনা ও পরামর্শের জন্য শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে নিয়মিত এরিয়া ভিত্তিক বৈঠক করেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার ঝাঁঝরা এরিয়ায় সেই বৈঠক ছিল। বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য বোর্ডের সদস্য তথা সিটু নেতা রঞ্জিত মুখোপাধ্যায়, বিএমএস নেতা ধনঞ্জয় পাণ্ডে, এআইটিইউসি-র শৈলেন্দ্র সিংহ, মাধব বন্দ্যোপাধ্যায়, এইচএমএস নেতা বিষ্ণুদেও প্রমুখকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিষ্ণুদেও বাদে সবাই পৌঁছে যান। তাঁদের প্রতিনিধিকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, এই প্রশ্ন তুলে এরিয়া কার্যালয়ের গেটের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন কেকেএসসি কর্মীরা। সেই সময়েই বিষ্ণুদেওয়ের গাড়ি সেখানে পৌঁছয়।
অভিযোগ, কয়েক জন লাঠি নিয়ে চড়াও হন গাড়ির উপরে। কাচ ভেঙে যায়। চালককে মারধর করা হয়। গাড়ি ঘুরিয়ে এলাকা ছাড়েন তাঁরা। সভাকক্ষে ঢুকে বাকি শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদেরও জোর করে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিএমএস নেতা ধনঞ্জয়ের অভিযোগ, “প্রায় একশো জন আচমকা সভাকক্ষে ঢুকে আমাদের বার করে দেয়। তাঁদের যা বক্তব্য, কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেন। আমাদের অসম্মান করার অধিকার তাঁদের নেই।”
বিষ্ণুদেও তৃণমূল নেতা হলেও তিনি তৃণমূল প্রভাবিত কেকেএসসি সংগঠনে নেই। তিনি এইচএমএসের নেতা। তাঁর অভিযোগ, “কেকেএসসি এই হামলা করেছে। ওরা ওয়েলফেয়ার বোর্ডে জায়গা চায়। কিন্তু সে জন্য কিছু নিয়ম রয়েছে। সেগুলি পালন করতে হবে। জেসিসি বৈঠকও হতে দেয় না ওরা।” কেকেএসসি নেতা বিষ্ণুদেব যশের পাল্টা দাবি, “আমাদের সঙ্গে প্রায় ৩৫-৪০ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। অথচ, কমিটিতে আমাদের জায়গা হয় না। শ্রমিকদের সমর্থন নেই, তেমন নানা সংগঠনকে বোর্ডে রাখা হয়েছে। তাই আমরা বৈঠকে আপত্তি জানিয়েছি। জেলা পরিষদ সহ-সভাধিপতিকে আমরা চিনতে পারিনি। উনি আমাদের দলের নেতা হিসেবে পরিচয় দিতে পারতেন।”
হামলার বিষয়ে থানায় অভিযোগ করবেন বলে জানান বিষ্ণুদেও। যদিও বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি বলে ফরিদপুর (লাউদোহা) থানা সূত্রে জানা গিয়েছে।