• অভিষেকের সুরে মিলেছে মমতার সুর,RG কর কাণ্ডের পর প্রথম ক্যাবিনেট বৈঠক ঘিরে জল্পনা
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২৩ আগস্ট ২০২৪
  • গতকাল নরেন্দ্র মোদীকে ধর্ষণ ইস্যুতে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বেশ কয়েকদিন পর ফের মুখ খুলেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ধর্ষণ ইস্যুতে সমাধানসূত্র বের করার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। মোদীকে লেখা মমতার চিঠিতেও যেন সেই সুরেরই প্রতিফলন ঘটেছিল। এই সবের মধ্যেই বৃহস্পতি রাতে নবান্নের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়, আগামী ২৮ অগস্ট অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ক্যাবিনেট বৈঠক। উল্লেখ্য, সেদিনটা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই আবহে অভিষেক সেদিন কোনও বার্তা দেবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা আছে। আর অভিষেক কোনও বার্তা দিলে, সেটার প্রভাব বিকেলের ক্যাবিনেট বৈঠকে পড়বে কি না, তা নিয়েও জল্পনা আছে।

    উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডে সঞ্জয় রায় গ্রফতার হতেই এনকাউন্টারের বিধান আনার দাবি তুলেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারের তৎপরতার প্রশংসাও শোনা গিয়েছিল তাঁর গলায়। তবে এরপর থেকে সরকারের পদক্ষেপে নাকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছিল বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্টে। এদিকে দাবি করা হয়, অসন্তুষ্টির কারণেই তাঁর অফিসের তরফ থেকে দলের মিডিয়া দেখভালের কাজ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই সবের মাঝে গতকাল ফের একবার মুখ খোলেন অভিষেক বন্দ্যোপধ্যায়। একটি দীর্ঘ পোস্টে ভারতকে 'জেগে ওঠার' বার্তা দেন অভিষেক। উল্লেখ্য, এর আগে আনন্দবাজারের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, আরজি কর নিয়ে রাজ্যের একাধিক পদক্ষেপ ভুল বলে মনে করছেন অভিষেক। এই কারণেই আরজি কর কাণ্ডে দলের যে কর্মসূচি, তা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন অভিষেক। তাঁর নীরবতা ভাঙাতে আসরে নামেন কুণাল ঘোষ। তবে তাতেও কিছুই বলছিলেন না অভিষেক। তবে গতকাল তিনি মুখ খোলার পর দলের অন্দরে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। এদিকে অভিষেক যেই সুরে বার্তা দিয়েছিলেন, তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছিল মোদীকে লেখা মমতার চিঠিতে।

    গতকাল নিজের পোস্টে অভিষেক লিখেছিলেন, 'গত ১০ দিন ধরে যখন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ঘটনার প্রতিবাদে গোটা দেশে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে, সেই সময়তেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় আরও ৯০০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। যখন মানুষ এই জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন, তখনও এই জঘন্য অপরাধ ঘটে চলেছে। দঃখের বিষয়, এই সমস্যার দীর্ঘমেয়াদী কোনও সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসেনি। প্রতিদিন গড়ে ৯০টি করে ধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে। প্রতি ঘণ্টায় ৪টি করে ধর্ষণ হয়েছে। অর্থাৎ, গড়ে প্রতি মিনিটে ১টি করে। তাই এই নিয়ে যে আমাদের কত দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তা স্পষ্ট। আমাদের কঠোর আইন আনতে হবে। ৫০ দিনের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে রায় ঘোষণার বিধান আনতে হবে। ফাঁকা প্রতিশ্রুতি দিলে হবে না। রাজ্য সরকারকে এই নিয়ে তৎপর হতে হবে এবং কেন্দ্রের ওপর চাপ তৈরি করতে হবে ধর্ষণ-বিরোধী কঠোর আইন আনার জন্যে। এর থেকে কম কিছু হলে তা প্রতীকী হবে এবং কার্যকরী হবে না। জাগো ভারত।'

    এরপর বিকেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠি পাঠান। সেখানে মমতা প্রস্তাব দেন, ধর্ষণের মতো এই ধরনের ঘটনা রুখতে কঠোর আইন প্রণয়ন করা হোক। ১৫ দিনের মধ্যে শেষ করা হোক বিচারপ্রক্রিয়া। মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, 'মহিলারা যাতে সুরক্ষিত বোধ করেন, সেজন্য ধর্ষণের ঘটনায় ইতি টানতে হবে। সেটা সকলেরই দায়িত্ব। আর সেই দায়িত্ব পালনের জন্য ধর্ষণের ঘটনায় ইতি টানতে হবে। প্রণয়ন করতে হবে কঠোর আইন। দ্রুত শুনানির সময় ফাস্ট-ট্র্যাক কোর্ট গঠন করতে হবে। ১৫ দিনের মধ্যে শেষ বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।' পরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় তা সাংবাদিকদের সামনে পাঠ করে শোনান।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)