• আরজি কর কাণ্ডে যা শুনবেন, তাই বিশ্বাস করবেন না! গল্প আর বাস্তবে বেজায় অমিল...
    ২৪ ঘন্টা | ২৩ আগস্ট ২০২৪
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আরজি করে মৃত চিকিত্‍সক-পড়ুয়া। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নির্যাতিতার শরীরে ২৫টিরও বেশি গভীর ক্ষতের উল্লেখ। যেখানে ১৬টি বাহ্যিক আঘাত আর ৯টি অভ্য়ন্তরীণ আঘাত। নির্যাতিতার মাথা, মুখ, ঠোঁট, চোখ, ঘাড়, হাত, যৌনাঙ্গে গভীর ক্ষতের উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে। এই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। এই আরজিকর কাণ্ডেরই বিভিন্ন ধরনের ভুয়ো খবর বাজার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেইসব খবর পড়ছেনও মানুষজন।

    সরকারি হাসপাতাল এবং কলকাতা পুলিস এই ঘটনাকে আত্মহত্যা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করে। যা সারা দেশের মানুষের মনে সন্দেহের বীজ বপন করে যে হয়তো কোনও অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এরপরেই ন্যায়বিচার চেয়ে রাস্তায় নামে সাধারণ মানুষ। শুরু হয় ঘটনা এবং অনুমানের মিশেলের মারাত্মক ককটেল, অর্ধসত্য, হাফ বেকড কিংবা মিথ্যা রটনার ঘনঘট, যা ভয়ংকর। 

    এতে ঘৃতাহুতি দিয়েছে এর আগে বিভিন্ন ধর্ষণের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, সেই সঙ্গে প্রশাসন ও পুলিসের আরজি কর কান্ডে অসংবেদশীলতা। কিন্তু ঘটনাটা যতটা ভয়ংকর তার থেকেও বেশি মারাত্নক ভুল তথ্য এবং বিভ্রান্তিকর তথ্যের জমাট বুনন। ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিঃসন্দেহে রয়েছে এক নৃশংস ধর্ষণ-খুন, যা নিয়ে এখন জল্পনা, ভুয়ো প্রতিবেদন এবং অতিরঞ্জিত তথ্যের বন্যা। 

    মামলায় কলকাতা পুলিসের প্রাথমিক শিথিলতা, মমতার ভিকটিম শেমিংয়ের ইতিহাস এবং ২০১৩ সালের কামদুনি গণধর্ষণ নিয়ে কলকাতার পুলিস কমিশনার বিনীত কুমার গোয়েলের সমালোচনা সমস্ত কিছু এই অবিশ্বাসের ভীতকে আরও মজবুত করেছে। হাসপাতালের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয় এবং এই ঘটনায় তিন ঘণ্টা পরে অধক্ষ্যের পরিবারকে জানানো ঘটনা আরও উসকে দেয়। 

    অঙ্গ পাচারের দাবি, হাসপাতালে পর্নোগ্রাফি র‌্যাকেটের মতো তথ্য কোনওটির এখনও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ মেলেনি। সবচেয়ে বিরক্তিকর কিন্তু বিভ্রান্তিকর দাবি, ধর্ষণকে গণধর্ষণ হিসেবে চিহ্নিত করা।  ডাক্তারের ধর্ষণ-হত্যার পর প্রাথমিক দাবি ছিল গণধর্ষণের। যা পরে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। কিন্তু এই ভুল তথ্য এল কোথা থেকে? এক ডাক্তারের সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া বাইটের ভিত্তিতে। এক ডাক্তার বলেন, তিনি ওই পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পড়েছেন যেখানে ১৫১ মিলিগ্রাম চটচটে তরল পদার্থ নির্যাতিতার যোনি থেকে পাওয়া গিয়েছে। যা একজনের দ্বারা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, কোনও পুরুষের একবারের ইজেকশনে ৫ মিলিগ্রাম সিনেম থাকতে পারে। তাই এত পরিমাণ সিমেন পাওয়া গেলে তা কেবল সঞ্জয় রায়ের কাজ নয়। আরও অনেকে যুক্ত থাকার কথা। 

    এমনকী সুপ্রিম কোর্ট আদালতের যুক্তির জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার কোনও ব্যবহার করার বিরুদ্ধে কঠোরভাবে পরামর্শ দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে এও বলা হয়, নির্যাতিতার পেলভিক হাড়, গলার হাড়-ভাঙা সহ বিভিন্ন বহু জায়গায় আঘাতের কথা বলা হয়। পরবর্তীতে অতিরিক্ত পুলিসসকমিশানর দ্য টেলিগ্রাফকে বলেন, কোনও হাড় ভাঙা ছিল না। 

    পরে ডা আকাশ নাগ নামে সিবিআইয়ের ডিআইজি পদমর্যাদার এক কর্তা একটি চিঠি লিখেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। এমন এক চিঠি ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানে লেখা হয়েছে, তিনি আরজিকর কাণ্ডে সিবিআইয়ের যে তদন্ত হচ্ছে সেখান থেকে তিনি সরে আসতে চান।এরপরই সিবিআই আধিকারিকের নাম করে ওই চিঠিঠিকে ফেক বা ভুয়ো বলে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার তরফে বলা হয়, সিবিআইয়ের ডিআইজি পরিচয় দিয়ে ডা আকাশ নাগ নামে এক ব্যক্তির একটি চিঠি ভাইরাল হয়েছে। ওই নামে কোনও সিবিআই অফিসার নেই। চিঠির বিষয়বস্তু একেবারেই মিথ্যে। 

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)