আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের পরেই প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছিলেন আন্দোলনকারী চিকিৎক ও পড়ুয়ারা। তাঁর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলিও। সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে যাবতীয় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ইডি তদন্তের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভারদ্বাজের এজলাসে দায়ের করা হয়েছিল মামলা। শুক্রবার এই মামলার শুনানি হয়।আদালত এ দিন আরজি করের যাবতীয় দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তভার তুলে দিয়েছে সিবিআই-এর হাতে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, যেহেতু আরজি করের এক চিকিৎসকের মৃত্যুতে তদন্ত করছে সিবিআই, তাই তদন্তভার তুলে দেওয়া হল সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী সংস্থার হাতেই। কাল শনিবার সকাল ১০টার মধ্যে তদন্ত নথি হস্তান্তরের নির্দেশ বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের।
তিন সপ্তাহ পরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে এই মামলার প্রেক্ষিতে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট দিতে হবে হাইকোর্টে। ১৭ সেপ্টেম্বর সেই রিপোর্ট তলব করেছে আদালত। একইসঙ্গে, আদালতের নির্দেশ, মামলাকারী আকতার আলি তাঁর নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনে সিবিআইয়ের কাছে আবেদন করতে পারবেন।
আইনজীবীদের একাংশের কথায়, ' যদি আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ থাকে সেক্ষেত্রে সিবিআই এফআইআর করলে তার প্রেক্ষিতে ইডি তদন্ত করতে পারে। এই মামলার ক্ষেত্রেও আখতার আলি সিবিআই এবং ইডি তদন্তের আবেদন করেছিলেন। এক্ষেত্রে সিবিআই-কে তদন্তভার দেওয়ার অর্থ এর মধ্যে আর্থিক দুর্নীতি নিয়েও প্রবেশ করতে পারবে ইডি।'
আখতার আলি জানিয়েছেন, প্রায় দুই বছর আগে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ছাত্রছাত্রীদের টাকা নিয়ে পাশ করানোর অভিযোগও তিনি সন্দীপের বিরুদ্ধে তোলেন। আখতার আলি সংবাদ মাধ্যমে বলেন, '২০২৩ সালে জুলাই মাসে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আমি অভিযোগ এনেছিলাম। তিনি ছাত্রদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছিলেন, আমি তার বিরুদ্ধে। পাশাপাশি বায়োমেডিক্যাল ওয়েস্ট (চিকিৎসা সংক্রান্ত আবর্জনা) বাইরে পাচার করতেন। এতে একজনের এইচআইভির মতো রোগেও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।'
এবার আরজি করের যাবতীয় দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের দাবি, এরপর আরও বিপাকে সন্দীপ ঘোষ। এদিকে ইতিমধ্যেই সিঙ্গল বেঞ্চের এই রায়ে স্থগিতাদেশ চেয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেন সন্দীপ ঘোষ।
সন্দীপের আইনজীবী সওয়াল, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে। অথচ তাঁর কথাই শোনা হয়নি। দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো হয় বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে।