কিন্তু প্রশ্ন হল, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসেই কেন মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী? আরজি কর কাণ্ড নিয়েই কি এবার প্রশাসনিক তৎপরতা চান মমতা? যদিও এই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট হয়নি। বৃহস্পতিতে মুখ্যসচিব এই বৈঠক প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ওই দিনের বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন মুখ্যমন্ত্রী। সব মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীদের ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়াও অতিরিক্ত মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, অর্থ দফতর, পার্বত্য বিষয়ক দফতর, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর, উদ্বাস্তু ত্রাণ পুনর্বাসন দফতরের আধিকারিকদেরও ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
এর আগে ৫ অগস্ট বিধানসভা অধিবেশনের শেষ দিনে মন্ত্রিসভার বৈঠক করেছিলেন মমতা। তবে তার চারদিনের মাথায় শহর কলকাতার পরিস্থিতি বদলে যায়। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৯ অগস্ট মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় রাজ্য-রাজনীতি তোলপাড় হয়ে যায়। বর্তমানে রাজ্যের পরিস্থিতি বেগতিক, আরজি কর কাণ্ডে ফুঁসছে কলকাতার রাজপথ। নানা বিক্ষোভ আন্দোলনের জেরে চাপে রাজ্য প্রশাসন। আরজি কর কাণ্ডের তদন্তভার কলকাতা পুলিশের হাত থেকে সিবিআইকে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সুপ্রিম কোর্টে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা হয়। বৃহস্পতিবার তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে জমা দিয়েছে সিবিআই। সেখানেও সুপ্রিম কোর্টের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যকে। রাজ্যের বিরোধী দলগুলি ইতিমধ্যেই শাসক বিরোধী আন্দোলনে সামিল হয়েছে। সবমিলিয়ে রাজ্যের পরিস্থিতি টালমাটাল।
রাজনৈতিক মহল বলছে, এবার এই বেসামাল পরিস্থিতির রাশ টানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। সেই উদ্দেশ্যেই জরুরি ভিত্তিতে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন মমতা। অন্যদিকে, ২৮ অগস্ট তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভা রয়েছে মেয়ো রোডে। মমতাই সেই সভার প্রধান বক্তা। আরজি কর কাণ্ড নিয়ে বিরোধীদের কড়া বার্তা দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মন্ত্রিসভার বৈঠকের জন্য মুখ্যমন্ত্রী কেন তৃণমূলের এই কর্মসূচির দিনটিকেই বেছে নিলেন, তা নিয়ে জল্পনা তৈরী হয়েছে নানা মহলে। ওই বৈঠকে কি মন্ত্রিসভায় কোনও রদবদল হবে নাকি প্রশাসনিক রদবদল হবে, নাকি আরজি কর কান্ড নিয়ে জরুরি পদক্ষেপ করা হবে ? তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন থাকছে।