কাজে ফেরার বার্তা আইএমএ-র, তবু আন্দোলনে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা
এই সময় | ২৪ আগস্ট ২০২৪
এই সময়: প্রথমে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। তার পর স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারও পরে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল এবং হাইকোর্ট। আর মঙ্গল ও বৃহস্পতিবারে দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বিচারপতির বেঞ্চের পর শুক্রবার ফের রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব।এই লম্বা তালিকাটা তাঁদের, যাঁরা আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের আবেদন জানিয়েছেন, রোগীস্বার্থে তাঁরা যেন কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে ফেরেন। কিন্তু লাভ হয়নি। আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের খুন-ধর্ষণের ঘটনায় ‘বিচার না মেলায়’ এখনও রাজ্যের প্রায় সর্বত্র চলছে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি।
এ দিনও তাঁরা সাধারণ মানুষের সমর্থন চেয়েছেন। সমর্থন মিলছেও। কিন্তু যাঁরা পাশে দাঁড়িয়েছেন এই আন্দোলনের, অসুস্থ হলে তাঁদেরই অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পাচ্ছেন না আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জন্য।
বৃহস্পতিবার শুনানির পর সুপ্রিম কোর্টের আবেদনে সাড়া দিয়ে প্রায় সারা দেশেই উঠে গিয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি। দিল্লি এইমস, পিজিআই চণ্ডীগড়, দিল্লির রামমনোহর লোহিয়া কিংবা লেডি হার্ডিঞ্জ হাসপাতাল, এমনকী এ রাজ্যে কল্যাণী এইমসের জুনিয়র ডাক্তাররাও কর্মবিরতি তুলে নিয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন শুক্রবার থেকে।
কিন্তু একযাত্রায় পৃথক ফলের মতো একমাত্র ব্যতিক্রম রয়ে গিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের এক রা— দোষীদের দ্রুত শাস্তি অথবা সিবিআই তদন্তের গতিপ্রকৃতি স্পষ্ট না জানা পর্যন্ত চলবে কর্মবিরতি। শুক্রবার বিকেলে সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়ে সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে আসেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের প্রতিনিধি দল।
এ দিকে স্বাস্থ্যসচিবও এ দিন ‘সব দাবি পূরণ করা হয়েছে’ জানিয়ে অবিলম্বে আন্দোলনকারীদের কাজে যোগ দিতে বলেছেন। যদিও সেই আবেদনেও সাড়া দেননি জুনিয়র ডাক্তাররা।
এ দিন সিবিআই তদন্তের গতিপ্রকৃতি জানতে চেয়ে সিবিআই-কে একটি ই-মেল করেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। পরে বিকেলের দিকে তাঁদের একটি প্রতিনিধি দল সিজিও কমপ্লেক্সে যায় তদন্তের অগ্রগতি এবং দোষীদের গ্রেপ্তারির আশু সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলতে। কিন্তু আন্দোলনকারীদের দাবি, সিবিআই আধিকারিকরা তাঁদের জানান, যেহেতু বিষয়টি বিচারাধীন এবং তদন্ত হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে, তাই এ ব্যাপারে তাঁরা কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না।
এ দিকে এই ডামাডোলের মধ্যে আরজি করের পঠনপাঠন প্রায় শিকেয় উঠেছে। ফলে অধিকাংশ ডাক্তারি পড়ুয়াই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। বিশেষত ছাত্রীরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ৯ অগস্টের আগে যেখানে আরজি করে ১৬০ জন মহিলা জুনিয়র ডাক্তার থাকতেন, এখন সেখানে সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৭ জনে। এমন আবহেই হাসপাতাল চত্বর, কলেজ ও হস্টেলের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সিআইএসএফ এবং কলকাতা পুলিশ এ দিন যৌথ মহড়া দিয়েছে।