• আসেনি কন্যাশ্রীর টাকা, কলেজে ভর্তি হয়েও পড়াশোনা ছাড়ার মুখে সাদিয়া
    বর্তমান | ২৪ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: একে একে স্কুলের সব বন্ধুরা পেয়ে গিয়েছে কন্যাশ্রীর টাকা। কিন্তু একইসঙ্গে আবেদন করেও টাকা পাননি নাকাশিপাড়ার কলেজ পড়ুয়া সাদিয়া খাতুন। টাকা পাওয়ার আশায় দেড় বছর ধরে চক্কর কেটেছেন জেলাশাসকের অফিসে। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে ভর্তি হলেও উচ্চশিক্ষার খরচ চালানো এখন দায়। টাকার অভাবে বন্ধ হতে বসেছে পড়াশোনা।

    নদীয়ার নাকাশিপাড়া চণ্ডীপুর এলাকার বাসিন্দা সাদিয়া। বাড়িতে বাবা, মা ছাড়াও এক দাদা ও তিন দিদি রয়েছেন। অভাবি সংসারে সকলের উচ্চশিক্ষা জোটেনি। কিন্তু সাদিয়া মেধাবী। উচ্চশিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে তাঁর। ভেবেছিলেন কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা কাজে লাগাবেন কলেজের খরচ সামলাতে। দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময়ে স্কুলের বাকি বন্ধুদের সঙ্গে আবেদন করেছিলেন কন্যাশ্রীর কে-২ প্রকল্পের টাকা পাওয়ার জন্য। কিন্তু এখনও প্রকল্পের টাকা আর ঢোকেনি তাঁর অ্যাকাউন্টে। ফলে ধারদেনা করেই বাংলা অনার্স নিয়ে ভর্তি হয়েছেন কলেজে। কিন্তু পড়াশোনা চালাতে গেলে প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকা বড্ড দরকার। দেড় বছর ধরে তাই কেবল কন্যাশ্রী পাওয়ার আশায় চক্কর কেটেই যাচ্ছেন জেলাশাসকের অফিসের এই ঘর থেকে অন্য ঘরে। সমস্যার প্রসঙ্গে সাদিয়া বলেন, চিচুড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সময় আবেদন করেছিলাম কন্যাশ্রীর জন্য। টাকা ঢোকেনি দেখে একাধিকবার জেলাশাসকের অফিসে এসেছি। কিন্তু প্রত্যেকবারেই বলা হয়, ওদের এখান থেকে টাকা ছাড়া হয়ে গিয়েছে। যদিও সেই টাকা আমার অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। আমি তার তথ্য প্রমাণও দেখিয়েছি। কিন্তু তাতেও উত্তর বদলায়নি। অফিসাররা আমাকে বলেন, আমার সঙ্গে বাকি যে ১৮ আবেদনকারী ছিলেন প্রত্যেকে টাকা পেয়েছেন। সেই তালিকায় আমার নামও রয়েছে। ক্ষোভের সুরে সাদিয়ার জেঠু সাবির আলি শেখ বলেন, ভাই অসুস্থ। তার পক্ষে বারবার দৌড়াদৌড়ি করা সম্ভব নয়। তাই আমি এসেছি সাদিয়ার সঙ্গে। কিন্তু লাভ হচ্ছে না। আজ টাকা না পেলে হয়তো ওর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কারণ পরিবারের সেই আর্থিক সামর্থ্য নেই।

    এদিকে প্রশাসনের একটি সূত্র মারফত খবর, অ্যাকাউন্টের নম্বা বা অন্যান্য তথ্য সব ঠিক থাকলেও অনেকের ক্ষেত্রেই এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পোর্টালে সমস্ত তথ্য ঠিক থাকলেও, টাকা পাননি কিছু আবেদনকারী। 

    আপাতত সেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি নিয়ে নদীয়ার জেলাশাসক এস অরুণ কুমার বলেন, কন্যাশ্রী প্রকল্পে নদীয়া জেলা রাজ্যের মধ্যে প্রথম হয়েছে। কিন্তু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিয়ে একটা সমস্যা দেখা যায়। যেখানে টাকা ছাড়া হয়েছে তা অনলাইনে দেখা যায়। কিন্তু অনেকেই এসে বলেন, তাঁর অ্যাকাউন্টে নাকি টাকা ঢোকেনি। আমি সেই সমস্ত বিষয় গুরুত্ব সহকারে দেখি। যাতে কারও সমস্যা না হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)