• তরুণীর দুঃসংবাদ পেয়ে হাসপাতালের শীর্ষকর্তা পুলিসকে বলেন, ‘আমি বুঝে নেব, ভাববেন না’, তদন্তে জেনেছে সিবিআই
    বর্তমান | ২৪ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি করের সেমিনার হলে চিকিৎসক তরুণীর দেহ পড়ে থাকাকালে হাসপাতালের এক শীর্ষকর্তাকে পুলিসের তরফে সেখানে বারবার ডাকা হয়। কিন্তু সেখানে তিনি যাননি। ‘দেখে নিচ্ছি’ বলে তিনি ফোন কেটে দিচ্ছিলেন! আউট পোস্টে কর্তব্যরত পুলিস কর্মীদের কাছ থেকে এই তথ্য জেনেছে সিবিআই। কেন তিনি বিষয়টি জানার পরেও নিশ্চুপ রইলেন, এই রহস্যের জট খোলার চেষ্টা হচ্ছে।

    ঘটনার দিন আর জি কর আউট পোস্টে কর্মরত পুলিস কর্মীদের জেরা করে সিবিআই জেনেছে, ওই বিল্ডিংয়ের সিকিউরিটি গার্ড গিয়ে খবর দেন যে, সেমিনার হলে একটি দেহ পড়ে রয়েছে। নিরাপত্তা রক্ষীকে ইন্টারকামে ফোন করা হয়। ‘হাসপাতালের প্রতিনিধি’ জানিয়ে ফোন করা ব্যক্তি নিরাপত্তারক্ষীকে বলেন, ‘বড় ঘটনা ঘটে গিয়েছে! তাই সেমিনার হলে দ্রুত পুলিস ডেকে আনতে হবে।’ সেইমতো নিরাপত্তারক্ষীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিস কর্মীরা সেখানে পৌঁছন। সেখানে দেহ পড়ে থাকা নিয়ে আউট পোস্টের অফিসাররা টালা থানায় খবর দেন। এরপর তাঁরা হাসপাতালের এক শীর্ষকর্তাকেও ফোন করেন। প্রথমে তিনি বলেন, লোক পাঠাচ্ছেন এবং দেখে নিচ্ছেন। মিনিট দশেক পরেও ওই কর্তা বা তাঁর প্রতিনিধি কেউ সেখানে যাননি। তাঁকে ফের ফোন করা হলে তিনি বলেন যে, ‘আমি বুঝে নিচ্ছি, আপনাদের ভাবতে হবে না।’ তারপরেও কারও দেখা না মেলায় ফোন করা হয় তাঁকে। ফের কেটে দেওয়া হয় সেই ফোন। 

    এখান থেকেই সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের অনুমান, এর পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। আর তা করা হয়েছিল কোনও আধিকারিকের ঘরে বসে। রহস্য আরও বেড়েছে ওই শীর্ষকর্তা পুলিসের ফোনের পর তাঁর অত্যন্ত কাছের ডাক্তারদের পরপর ফোন করায়। তাঁদের মধ্যে কী কথাবার্তা হয়েছিল তা  জানার চেষ্টা হচ্ছে। একইসঙ্গে তাঁদের অনুমান, ওই ফোনালাপে ঠিক হয়ে থাকতে পারে যে তরুণীর দেহ দ্রুত ময়নাতদন্ত করে গোটা বিষয়টি হাল্কা করে দেওয়া হবে। হাসপাতালের শীর্ষকর্তার পাশাপাশি ওইদিন ঘটনাস্থলে পৌঁছনো সমস্ত পুলিস অফিসারের ফোনও পুলিসের নজরে। তাঁরা ওইদিন কাদের ফোন করেছিলেন এবং কোনও নির্দেশ শীর্ষ আধিকারিকদের কাছে এসেছিল কি না, সেটাও জানার চেষ্টা করছে সিবিআই। এদিকে, সিবিআই তদন্তের অগ্রগতি জানতে চিকিৎসকদের প্রতিনিধিরা দেখা করেন এজেন্সির অফিসাররদের সঙ্গে। এছাড়া আর জি করে ভাঙচুরের ঘটনায়  দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে লালবাজার। এই ঘটনায় পলাতক এখনও ১১ জন।
  • Link to this news (বর্তমান)