• ব্যাহত পরিষেবা, মেডিক্যাল থেকে রোগীকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে পরিবার
    বর্তমান | ২৪ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: মুখে অক্সিজেন মাস্ক। দু’চোখ কালো হয়ে গিয়েছে। ডান হাতে স্যালাইনের নিডল লাগিয়ে রাখা। ঠিকমতো তাকাতেও পারছেন না রোগী। ভর্তি ছিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। অভিযোগ, জরুরি বিভাগের ভিতরে পরিষেবা কার্যত তলানিতে। খুব প্রয়োজনেও চিকিৎসককে ডেকে পাওয়া যাচ্ছে না। চিকিৎসাধীন ওই রোগী তাই বাধ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছেন বাড়ি। শুক্রবার দুপুরে এক ভুক্তভোগী বললেন, ‘আন্দোলন চলুক। কিন্তু আর কতদিন চিকিৎসা ফেলে রেখে কর্মবিরতি চলবে? এর ফলে প্রতিদিন চরম ভোগান্তি হচ্ছে হাজার হাজার রোগীর। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, কাজে যোগ দিতে। তাহলে এখনও কর্মবিরতি কেন? কাজ করেও তো আন্দোলন করা যায়।’ ক্ষোভের সঙ্গে অপর এক ব্যক্তিও প্রশ্ন তুললেন, ‘আর জি কর কাণ্ডে রোগীরা তো অভিযুক্ত নন। তাহলে তাঁরা কেন শাস্তি পাচ্ছেন?

    যে রোগীর কথা বলা হচ্ছিল তাঁর নাম আজিজুল রহমান। ২১ আগস্ট ডানকুনি থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়েছিল। ২৩৪ নম্বর বেডে ছিলেন। শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও সেভাবে চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তাই একদিন পরই বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর দাদা সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘ভর্তি করার পর ঠিকমতো চিকিৎসা হচ্ছিল না। চিকিৎসক আসছিলেন না। দরকার হলে আমরা নার্সদের বলছিলাম। কিন্তু ওঁদের বক্তব্য, চিকিৎসক এসে না দেখলে, আমরাও কোনও ওষুধ দিতে পারব না। তাই এখান থেকে ছুটি করিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছি।’

    হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন মিঠু পাল নামে এক মহিলা। তাঁর এক আত্মীয় ভর্তি মেডিক্যালে। তিনি বলেন, ‘বাইরে আন্দোলন চলছে। ভিতরে তার প্রভাব পড়ছে। আমাদের রোগী নিয়ে চিন্তায় আছি। আমরা তো চিকিৎসার কিছু জানি না। তাই কী হচ্ছে, কী হচ্ছে না, বুঝতে পারছি না। তবে পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে দেখেই বুঝতে পারছি।’ সাবিনা বিবি নামে অন্য এক রোগীর আত্মীয় বলেন, ‘মানুষ বিপদে না পড়লে তো হাসপাতালে আসে না। যাঁদের বিপদ তাঁরা এসেছেন এখানে। অথচ তাঁদের যদি চিকিৎসা না হয়, তাহলে কোথায় যাবে? বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার করানোর টাকা সবার তো নেই। তাই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ রোগীরাই।’
  • Link to this news (বর্তমান)