• ঋণের বোঝা, অশোকনগরে ৮ বছরের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে আত্মহত্যা দম্পতির
    বর্তমান | ২৪ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: আট বছরের মেয়েকে নিয়ে দম্পতির আত্মহত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল গুমায়। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে অশোকনগর থানার গুমা ২ নম্বর পঞ্চায়েতের নবপল্লি এলাকায়। পুলিস জানিয়েছে, মৃতদের নাম দীপক রায় (৩৩), পিউ রায়(২৭) ও মিষ্টি রায় (৮)। দম্পতির মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোট। তাতে লেখা, ঋণের কারণেই সপরিবারে আত্মঘাতী। এর জন্য কেউ দায়ী নয়। এমনটাই দাবি করেছে পুলিস।

    স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচ বছর ধরে অশোকনগর থানার গুমা নবপল্লি এলাকায় বসবাস করেন এই দম্পতি। ভাড়া বাড়িতেই থাকতেন তাঁরা। বিড়া এলাকায় একটি প্লাই কারখানায় কাজ করতেন দীপকবাবু। তাঁদের একমাত্র মেয়ে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়ার পর ঘুমোচ্ছিলেন তাঁরা। ওই রাতে পিউ তাঁর এক পড়শিকে বলেছিলেন শুক্রবার সকালে ফোন করে তাঁদের ঘুম থেকে ডেকে দিতে। প্রতিবেশী মুন্নি হালদার সেই মতো একাধিকবার ফোনও করেছিলেন। কিন্তু ফোন তোলেননি কেউ। ডাকাডাকি করলেও সাড়াশব্দ মেলেনি। এরপর খবর দেওয়া হয় বাড়ির মালিককে। বাড়ির মালিক জয়দেব সাহা তড়িঘড়ি ছুটে আসেন। এরপর ঘরের দরজা ভেঙে তিনজনেরই ঝুলন্ত দেহ দেখতে পাওয়া যায়। ঘরেই পড়ে ছিল সুইসাইড নোট। মুন্নি হালদার বলেন, আমাকে সকালে ডেকে দিতে বলেছিলেন পিউ। সেইমতো আমি একাধিকবার ফোন করেছি, ফোন তোলেননি। বৃহস্পতিবার আমার সঙ্গে পিউয়ের অনেক কথা হয়েছিল। কিন্তু এক রাতের মধ্যে এমনটা হয়ে যাবে, ভাবতে পারছি না। দুপুর ১২টা বেজে গেলেও ঘরের দরজা না খোলায় আমাদের সন্দেহ হয়। কেন ওঁরা এমন সিদ্ধান্ত নিলেন বুঝতে পারছি না। রাতে কোনও আওয়াজ আমাদের কানে আসেনি।

    তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ প্রবীর মজুমদার বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। ফুটফুটে শিশুকে নিয়ে এমন আত্মহত্যার ঘটনা আগে অশোকনগরে ঘটেনি। পুলিস একটি সুইসাইড নোট পেয়েছে। বাড়ির মালিক জয়দেব সাহা বলেন, ভালো মানুষ ছিলেন দীপক। কেন এভাবে তাঁরা চরম সিদ্ধান্ত নিলেন, জানি না। এ নিয়ে বারাসত পুলিস জেলার সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া বলেন, চার বছর ধরে ওই পরিবার এই বাড়িতে ভাড়া থাকত। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে ঋণকেই ওঁরা তুলে ধরেছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে একটি ঋণপ্রদানকারী সংস্থার এক কর্মী নবপল্লি এলাকায় এসেছিলেন। দীপকের ছবি দেখিয়ে তাঁর হদিশ পেতে চাইছিলেন। অনেকে মনে করছেন, এদিন বোধহয় ঋণের টাকা পরিশোধের কথা ছিল দীপকের। তাই তার আগের রাতেই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
  • Link to this news (বর্তমান)