• ‘আর জি করের খ্যাতিতে অপমানের দাগ’, জন্মদিনে আক্ষেপ চিকিৎসকের বর্তমান প্রজন্মের
    বর্তমান | ২৪ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে বাংলার মাটিতে স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন প্রতিথযশা চিকিৎসক। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি হয় ক্যালকাটা স্কুল অফ মেডিসিন। সেই প্রতিষ্ঠান আজ তাঁরই নামে নামাঙ্কিত। ডাঃ রাধাগোবিন্দ করের নামে নামকরণ আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের। চিকিৎসাশাস্ত্র ও মানবসেবায় অবদানের জন্য তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল দেশের সর্বত্র। এবার সেই হাসপাতালেই মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন। সে ঘটনায় কিংবদন্তী এই চিকিৎসকের সম্মানও ভুলুণ্ঠিত বলে বক্তব্য অনেকের। আর জি করের ১৭৪তম জন্মদিবসে তাঁর হাওড়ার ভিটেতে বসে এই আক্ষেপ করলেন পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম। 

    হাওড়ার ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের বেতড় মোড়। সেখানে থাকেন কর পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের বনেদি বাড়ি। বাড়ির অন্দরে দুর্গা দালান। তার পাশে এক অংশে রাধাগোবিন্দ করের জন্ম ও বেড়ে ওঠা। সে অংশটি বর্তমানে ভগ্ন। ১৯৭৮ সালের বন্যায় ভেঙে গিয়েছিল দালান সহ বাড়ির অন্যান্য অংশ। ভাঙাচোরা খিলানগুলোকে জড়িয়ে রয়েছে আগাছা। তবে বাড়ির সামনের অংশে বর্তমানে থাকে কর পরিবারের চতুর্থ ও পঞ্চম প্রজন্মের ছ’টি পরিবার। প্রতিবছরই চিকিৎসকের জন্মদিবস অনাড়ম্বরভাবে পালন করেন তাঁরা। বাড়ির সামনের অংশে ডাঃ রাধাগোবিন্দ করের ছবিতে মালা ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানায় বর্তমান প্রজন্মের সদস্যরা। তবে এ বছর অনেক কিছু পাল্টে গিয়েছে। সকাল থেকে সংবাদমাধ্যমের ভিড় ওই বাড়িতে। কর পরিবারের চতুর্থ প্রজন্ম পার্থ কর বলেন, ‘রাধাগোবিন্দ করের তৈরি করা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের ঘৃণ্য ঘটনা যে ঘটবে, তা ভাবনারও অতীত। ন্যক্কারজনক ঘটনায় তাঁর নাম বারবার চর্চিত হচ্ছে। এটা ভীষণ দুঃখের।’

    চিকিৎসকের ছবির পাশে বসেছিলেন পঞ্চম প্রজন্মের সদস্যা স্বাগতা ঘোষ। আর কি কর সম্পর্কে ছিলেন তাঁর দাদুর কাকা। স্বাগতাদেবী বলেন,‘এই বাড়িতেই রাধাগোবিন্দ করের জন্ম। তাঁর ছোটবেলাও কেটেছিল এখানে। হেয়ার স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর তিনি শ্যামবাজারে চলে যান। তবে এই বাড়ির সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ ছিল। চিকিৎসাশাস্ত্রের জন্য আর জি করের নাম যতটা খ্যাতি পেয়েছিল, আজ যেন তার থেকেও বেশি অপমানিত হচ্ছে নামটা।’ পরিবারের নতুন প্রজন্ম রূপান্তর ঘোষ পেশায় আই টি কর্মী। ন্যায় বিচারের দাবিতে মিছিলে পা মিলিয়েছেন তিনিও। রূপান্তরের কথায়, ‘নিহত চিকিৎসকের পরিবার যেন ন্যায়বিচার পায়। এতেই হয়ত আর জি করের নাম থেকে অসম্মানের দাগ মুছবে।’
  • Link to this news (বর্তমান)