এই সময়, আসানসোল: ফের একনাগাড়ে বৃষ্টির জেরে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়াল ডিভিসি। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় দামোদর ভ্যালি রিভার রেগুলেটরি কমিটির (ডিভিআরআরসি) নির্দেশে মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে ৩৬ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। এদিনই দুপুর ১২টায় কমলা সতর্কতা জারি করেছে ডিভিআরআরসি।ফের ব্যাপক পরিমাণে জল ছাড়ার কারণে নতুন করে নিম্ন দামোদর অববাহিকায় প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ডিভিআরআরসি-র সদস্য সচিব শশী রাকেশ পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড সরকারকে লিখিত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জল ছাড়ার কথা জানিয়েছেন। সকাল ৯টা থেকে ৩৬ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার সঙ্গে এই পরিমাণ আগামী ৬ ঘণ্টায় বেড়ে ৫০ হাজার কিউসেক হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
‘এই সময়’কে শশী রাকেশ জানান, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জল ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে উচ্চ দামোদর অববাহিকায় ধারাবাহিক ভাবে বৃষ্টি হওয়ায় পাঞ্চেত জলাধারে বেশি মাত্রায় জল ঢুকছে। অন্য দিকে, তেনুঘাটের ইঞ্জিনিয়ার অভিষেক কুমার জানিয়েছেন, বৃষ্টির কারণে বৃহস্পতিবার সেখানেও অতিরিক্ত জল এসে ঢোকায় বিকেল ৫টা থেকে তেনুঘাটের আরও দু’টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
ডিভিসির এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর (সিভিল) আঞ্জনি দুবে জানান, তিনি এদিন বাঁধগুলোর অবস্থা দেখতে বেরিয়েছেন। তিলাইয়া ও পাঞ্চেত দেখে তিনি মাইথনে ফিরছেন। বলেন, ‘বুধবার সকাল থেকে মাইথন, পাঞ্চেত সংলগ্ন এলাকা-সহ উচ্চ দামোদর অববাহিকায় টানা বৃষ্টি হয়ে চলেছে। ডিভিআরআরসি-র নির্দেশে আমরা জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়িয়ে পাঞ্চেত থেকে ৩০ ও মাইথন থেকে ৬ হাজার কিউসেক করেছি। আগামী কয়েক ঘণ্টায় পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আণাদের জানানো হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা নাগাদ মাইথনে ৪৭২.২৫ ফুট এবং পাঞ্চেতে প্রায় ৪১৬ ফুট উচ্চতায় জল রয়েছে। ওই সব এলাকায় অঞ্চলে আরও বৃষ্টি হবে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। গত মাসে ডিভিসির ছাড়া জলে পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া, হাওড়া, হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভপ্রকাশ করে তার দায় ঠেলেছিলেন ডিভিসি-র দিকে।
জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করে জল ছাড়ায় বারবার ক্ষতির মুখে পড়ছে পশ্চিমবঙ্গ। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছিলেন, মাইথন ও পাঞ্চেত বাঁধ থেকে কেন্দ্রীয় সরকার জমে থাকা পলি তোলার ব্যবস্থা করুক। তাতে অন্তত দু’লাখ কিউসেক অতিরিক্ত জল ধরে রাখা সম্ভব হবে।