• সেমিনার রুমের লকের সমস্যা মেটেনি কেন? আরজি কর তদন্তে সিবিআইয়ের প্রশ্ন
    এই সময় | ২৪ আগস্ট ২০২৪
  • এই সময়: আরজি করের ঘটনায় এ বার সামনে এলো একটি সিসিটিভি ফুটেজ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভোর ৪টে ৩মিনিটের ওই সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালের চারতলার সেমিনার রুমের বাইরের করিডরে ঘোরাফেরা করছে তরুণী চিকিৎসককে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায় ধৃত সঞ্জয় রায়। কানে লাগানো রয়েছে নীল রঙের একটি ব্লুটুথ হেডফোন। হাতে ধরা একটি হেলমেট।এই ছবির সূত্রেই সঞ্জয়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বলে আগেই দাবি করেছিল কলকাতা পুলিশ। তবে, এত স্পর্শকাতর মামলার ফুটেজ কী করে প্রকাশ্যে এলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন নেটিজে়নরা। (এই সময় অবশ্য এই ফুটেজের সত্যতা যাচাই করেনি)। তবে, বর্তমানে জেল হেফাজতে থাকা সঞ্জয় শুক্রবার আদালতে নিজের পলিগ্রাফ টেস্টের বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে বলে কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে।

    সঞ্জয়ের পলিগ্রাফ

    আরজি করে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় ধৃত সঞ্জয় শুক্রবার শিয়ালদহের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের (এসিজেএম) সামনে এ বিষয়ে সম্মতি দেওয়ায় খুব শীঘ্রই জেল হেফাজতে তার পলিগ্রাফ টেস্ট করানো হবে। পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এদিনই তাকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। বিক্ষোভের আশঙ্কা থেকে শুক্রবার দুপুর বারোটা নাগাদ কড়া নিরাপত্তায় সঞ্জয়কে আদালতে নিয়ে আসা হয়। শুনানির সময়ে বাইরে স্লোগান ওঠে, ‘আমাদের দাবি একটাই। অভিযুক্তের ফাঁসি চাই।’

    এর আগে সঞ্জয়ের হয়ে আদালতে কেউ দাঁড়াননি। ফলে, এদিনের শুনানিতে রাজ্য সরকারের লিগ্যাল এড ফোরামের পক্ষ থেকে অভিযুক্তের হয়ে সওয়াল করেন কবিতা সরকার। তিনি জামিনের আবেদন জানালেও তা খারিজ করে দেন বিচারক। কবিতা বলেন, ‘অন্য মামলায় যে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করেছি এক্ষেত্রেও সেটাই করব।’

    নজরে সেমিনার রুম

    তদন্তে উঠে এসেছে, আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার রুমের দরজার লক নাকি দীর্ঘদিন ধরে ঠিক ভাবে কাজ করছিল না! সেটা অনেকেই জানতেন। লকের গন্ডগোল থাকায় সেই রাতে তরুণী চিকিৎসকও দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করতে পারেননি। এই তথ্য কি কর্তৃপক্ষ জানতেন, যদি তাই হয় তবে দরজার লক কেন ঠিক করা হচ্ছিল না?

    তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে সিবিআইয়ের এক তদন্তকারী অফিসার পিটিআইকে জানিয়েছেন। এদিকে, একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, সেই রাতে যে চারজনের সঙ্গে ওই তরুণী ডিনার করেছিলেন তাঁদের মধ্যে দু’জন চিকিৎসকের ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেমিনার রুমে পাওয়া গিয়েছে। তবে, তদন্তকারীদের জেরায় তাঁরা জানিয়েছেন, সেই রাতে সেমিনার রুমে বসে নীরজ চোপড়ার জ্যাভলিন থ্রো দেখে তাঁরা দুটো নাগাদ সেখান থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন।

    জিজ্ঞাসাবাদ সন্দীপকে

    শুক্রবারও সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ থেকে রেহাই পাননি আরজিকরের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। এদিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ সিজিওতে পৌঁছন তিনি। সূত্রের খবর, বারবার বয়ান বদল করার কারণে তাঁরও পলিগ্রাফ টেস্ট করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইতিমধ্যেই যা মঞ্জুর করেছে আদালত।

    পুলিশকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ

    ঘটনার খবর কখন তাঁরা পেয়েছিলেন, কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল এরপর, সে সব জানতে এদিন ওই হাসপাতালের আউট পোস্টের দায়িত্বে থাকা কর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর, হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মোট ১২ জন কর্মীকে তলব করা হয়েছিল শুক্রবার। যাদের মধ্যে ৬ জন কর্মী সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির ছিলেন।

    সিবিআই সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল কীভাবে ঘিরে রাখা হয়েছিল, কী কী জিনিস তাঁরা সেখান থেকে সংগ্রহ করেছিলেন সে বিষয়ে এদিন জানতে চাওয়া হয়। পাশাপাশি, ঘটনায় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে তাঁরা চিনতেন কিনা, সে বিষয়েও তাঁদের প্রশ্ন করেন তদন্তকারীরা। একই সঙ্গে এ দিন সঞ্জয় ঘনিষ্ঠ পুলিশকর্মী অনুপ দত্তকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁর বক্তব্যেও বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
  • Link to this news (এই সময়)