অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: অসুস্থ স্বামীর জন্য ওষুধ কিনতে গিয়ে দোকান মালিকের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল স্ত্রীর। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পেরে প্রবল আপত্তি তুলেছিলেন স্বামী। আর প্রেমের পথে স্বামীকেই পথের কাঁটা বলে মনে করতে থাকেন স্ত্রী। শেষমেশ প্রেমিকের সাহায্যে ভুল ওষুধ খাইয়ে স্বামীকে খুনের অভিযোগ উঠল স্ত্রীর বিরুদ্ধে। হাওড়ার এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে স্ত্রীকে। পলাতক প্রেমিক। এই ঘটনায় অনেকে মনুয়াকাণ্ডের ছায়া দেখছেন অনেকে।
ঘটনা ঠিক কী? স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ার (Howrah) বাঁকড়ার মুন্সিডাঙার বাসিন্দা নাসিম আলি সর্দার। ১২ বছর আগে শেখপাড়ার পারভিন নামে এক মহিলার সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। তাঁদের পুত্রসন্তানও আছে। অনেকদিন ধরে অসুস্থ নাসিম। প্রথমে একটি নার্সিংহোম ও পরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে প্রায় সপ্তাহ খানেক চিকিৎসাধীন ছিলেন নাসিম। সেখানেই ক্রমশ নাসিমের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। কারণ খুঁজতে গিয়ে ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানতে পারে, কোনও চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই নাসিমকে দিনের পর দিন ক্যানসারের (Cancer) ওষুধ খাওয়ানো হয়েছে। তাতেই তাঁর শরীর ক্রমশ খারাপ হয়েছে।
এর পর বৃহস্পতিবার নাসিমের মৃত্যু (Death) হয়। স্ত্রী জানান, অসুস্থতার জেরেই মৃত্যু হয়েছে। তবে এই মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ হয় পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের। তাঁরা ডোমজুড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে নাসিমের স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের (Extra marrital affairs)জেরে খুনের অভিযোগ তোলা হয়। ডোমজুড় থানা তাঁর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে। ময়নাতদন্তের পর শুক্রবার নাসিমের দেহ কবর দেওয়া হয়।
এদিকে, অন্য কারও সঙ্গে প্রেমের কারণে নিজের স্বামীকে খুনের ঘটনায় স্ত্রী-ই অভিযুক্ত, তা জানতে পেরে শুক্রবার তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর চালায় স্থানীয়রা। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় হাওড়া সিটি পুলিশের (Howrah City Police) বিশাল বাহিনী। পুলিশের পদস্থ আধিকারিকদের নেতৃত্বে ওখানে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। একই সঙ্গে রাতেই নাসিমের স্ত্রীকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই ঘটনায় হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি সাউথ বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, ‘‘পরিবারের তরফে একটি অভিযোগ পেয়ে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত হচ্ছে। স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওষুধের দোকানের মালিকেরও খোঁজ চলছে।’’