পলিগ্রাফ টেস্টের প্রক্রিয়া শুরু করে দিল সিবিআই। সেই পলিগ্রাফ টেস্ট করা হবে সঞ্জয় রায় সহ সাতজনকে।
সঞ্জয় রায়- আরজি করে মহিলা চিকিৎসক খুনে মূল অভিযুক্ত এই সিভিক ভলান্টিয়ার। বর্তমানে তার ঠিকানা প্রেসিডেন্সি জেলের পহেলা বাইশের কুঠুরিতে। ঘটনার পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। পরে সিবিআই তাকে হেফাজতে নেয়। বর্তমানে তাকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। তবে সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে তার পলিগ্রাফ টেস্ট করা হবে।
সন্দীপ ঘোষ- ঘটনার সময় আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন সন্দীপ। পরে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ আঁচ ক্রমশ বাড়ছে এটা আঁচ করে তিনি ইস্তফা দেন। তবে তিনি পদত্যাগ করতেই তাকে নতুন দায়িত্ব দিয়েছিল সরকার। এখানেই প্রশ্ন সরকার কি বার বার সন্দীপ ঘোষকে আড়াল করার চেষ্টা করছে? তারও পলিগ্রাফ টেস্টের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। তার বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি দুর্নীতির অভিযোগ।
চার চিকিৎসক- যে চার চিকিৎসকের সঙ্গে ওই মহিলা চিকিৎসক সেই রাতে ডিনার খেয়েছিলেন তাঁদেরও পলিগ্রাফ টেস্ট করানো হবে। কোথাও কোনও অসঙ্গতি রয়েছে কি না সেটা দেখা হবে।
সঞ্জয় ঘনিষ্ঠ সিভিক ভলান্টিয়ার- সঞ্জয় রায়ের ঘনিষ্ঠ এক সিভিক ভলান্টিয়ারের পলিগ্রাফ টেস্ট করানো হবে। সূত্রের খবর, সেদিন বেলার দিকে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের সঙ্গে সঞ্জয়কে হাসপাতালের ওয়ার্ডে দেখা গিয়েছিল। ওই সিভিকের এক আত্মীয় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাকে দেখতে তারা গিয়েছিলেন বলে খবর। কিন্তু বাস্তবে কেন সেই সময় তারা গিয়েছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে পরবর্তী সিসিটিভি ফুটেজে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে আর দেখা যায়নি বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। তবে সেই সিভিকের পলিগ্রাফ টেস্ট করানো হবে বলে খবর।
দিল্লি থেকে সিবিআইয়ের স্পেশাল টিম কলকাতায় এসেছে। শনিবারই সঞ্জয়ের পলিগ্রাফ টেস্ট হতে পারে। তবে সূত্রের খবর, এই পলিগ্রাফ টেস্ট করতে বেশ খানিকটা সময় লাগে। সেকারণে সবার একই দিনে পলিগ্রাফ টেস্ট হয়ে যাবে এমনটা নয়। তবে সাধারণভাবে যেটা বলা হয় যে এই পলিগ্রাফ টেস্টের রিপোর্ট সরাসরি মামলাকে ঘুরিয়ে দিতে পারে এমনটা নয়। তবে এই পলিগ্রাফ টেস্টের রিপোর্টের মাধ্যমে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে অনেকটা সুবিধা হয়।
পলিগ্রাফ টেস্ট বা লাই ডিটেকটর পরীক্ষা হল সন্দেহভাজনের বলা কথা কতটা সত্যি বা মিথ্যা, তা ধরার একটি পরীক্ষা। এই টেস্টে চার থেকে ছয়টি সেন্সর ব্যবহার করা হয়। পলিগ্রাফ পরীক্ষা নেওয়ার জন্য একটি মেশিন ব্যবহার করা হয়। সেখানে এই সেন্সর থেকে একাধিক সংকেত কাগজের একটি স্ট্রিপে গ্রাফ আকারেরেকর্ড করা হয়।
শ্বাসের হার, তার পরিবর্তন, রক্তচাপ এবং ঘামের পরিমাণ এগুলিও দেখা হয়। হাত এবং পায়ে লাগানো সেন্সর থেকে আসা সংকেতগুলির মাধ্যমে এগুলি দেখা হয়। রক্তচাপ ঠিক আছে কি না তা দেখার জন্য আলাদা একটি মনিটরও থাকে। কেউ মিথ্যা বলতে চাইলে, তার শরীরে নানা পরিবর্তন আসে, সেগুলিই ধরা পড়ে এই পরীক্ষায়।